Land

অফিসে ‘জ্যান্ত ভূত’! জীবিত মামাকে মৃত দেখিয়ে জমি কব্জা করে নেওয়ার অভিযোগ ভাগ্নের বিরুদ্ধে

সরকারি নথিতে মৃত অঙ্গ ধাড়াকে সশরীরে কৃষ্ণগঞ্জ বিএলআরও অফিসে দেখে প্রায় ভূত দেখার মতো অবস্থা হয় আধিকারিকদের! নথি পরীক্ষা করে অঙ্গের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার নিয়ম বুঝিয়ে দেন আধিকারিকেরা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কৃষ্ণগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ১০:৫০
Share:

জমির কাগজ হাতে ‘মামা’ অঙ্গ ধাড়া। —নিজস্ব চিত্র।

ভূমি রাজস্ব দফতরে যিনি জমির কাজগপত্র দেখতে ঢুকলেন, সরকারি ভাবে তিনি মৃত! নথিপত্র তেমনটাই দাবি করছে। সেই ‘মৃত ব্যক্তি’র অভিযোগ, তিনি প্রতারণার শিকার। এমনকি, তাঁকে প্রতারিত করার নেপথ্যে ভূমি রাজস্ব দফতরের কর্মীদেরও ‘ইন্ধন’ আছে। জীবিত মামাকে মৃত দেখিয়ে তাঁর সম্পত্তি নিজের নামে করে নেওয়ার অভিযোগ উঠল ভাগ্নের বিরুদ্ধে। নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছেন ব্লক ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিকেরা। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ‘প্রতারিত’। নিয়ম মেনে সরকারি নথি দ্রুত সংশোধনের আশ্বাস দিয়েছেন ব্লক ভূমি রাজস্ব আধিকারিকেরা।

Advertisement

ভূমি রাজস্ব দফতর সূত্রে খবর, নদিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকা কৃষ্ণগঞ্জের পোড়াগাছা এলাকার বাসিন্দা অঙ্গ ধাড়া। আগে তিনি থাকতেন চৌগাছা এলাকায়। কিছু দিন আগে জমির নথির খোঁজখবর করতে গিয়ে তিনি দেখেন যে তাঁর নামে যে জমি ছিল, সেটা আর তাঁর নামে নেই। আকাশ ভেঙে পড়ে মাথায়। অঙ্গ জমির সরকারি তথ্য নিতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। কিছু ক্ষণ বাদেই তাঁর কাছে স্পষ্ট হয়ে যায় পুরো ঘটনা। দেখেন, জমির মালিক হিসাবে রয়েছে ভাগ্নে নিতাই ঝড়ের নাম। জালিয়াতি হয়েছে বুঝতে পেরেই তিনি সটান হাজির হন ব্লক ভূমি রাজস্ব দফতরে।

অন্য দিকে, সরকারি নথিতে ‘মৃত’ অঙ্গ ধাড়াকে সশরীরে কৃষ্ণগঞ্জ বিএলআরও অফিসে দেখে প্রায় ভূত দেখার মতো অবস্থা হয় আধিকারিকদের! নথি পরীক্ষা করে অঙ্গের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার নিয়ম বুঝিয়ে দেন আধিকারিকেরা।

Advertisement

অঙ্গের কথায়, ‘‘কাগজ খুঁজতে গিয়ে দেখি, আমার নামে জমি নেই। সরকারি অফিস থেকে জানতে আমি নাকি মারা গিয়েছি! প্রতিকার চেয়ে তাই সশরীরে ভূমি রাজস্ব দফতরে হাজির হয়েছি। দফতরের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকলে এমন কাজ করা সম্ভবই নয়।’’ পাশাপাশি ভাগ্নের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তিনি। অন্য দিকে, অভিযুক্ত নিতাইয়ের দাবি, ‘‘কী ভাবে এটা হয়েছে জানি না। আমি কিছু করিনি। দাদুর নামে সম্পত্তি ছিল। মা অংশীদার। বাকি কিছু জানি না।’’

অঙ্গের এক আত্মীয় বলেন, “গ্রামের পড়াশোনা না-জানা মানুষ নিজেদের জমিজমা সংক্রান্ত কাজ করতে হিমশিম খান। সেই সুযোগে জীবিত ব্যক্তিকে মৃত বানিয়ে তাঁর জমি কেড়ে নেওয়ার জন্য যাঁরা সহযোগিতা করেছেন, সেই সরকারি আধিকারিকদেরও শাস্তি পাওয়া উচিত।”

কী ভাবে সরকারি দফতর ভুল তথ্য খতিয়ে না দেখে অন্যের নামে জমি লিপিবদ্ধ করল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ব্লক ভূমি রাজস্ব আধিকারিক তুহিন বিশ্বাস বলেন, ‘‘এই ঘটনার সময় আমি এখানে ছিলাম না। অভিযোগ পেয়েছি। খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement