কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে অসীমা। নিজস্ব চিত্র
স্ত্রীকে খুন করার চেষ্টার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত বিশ্বজিৎ পাল কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণির বাসিন্দা। রবিবার রাতে এই ঘটনাটি ঘটেছে শান্তিপুরের ঘোড়ালিয়া বাইপাসপাড়া এলাকায়।
সঙ্কটজনক অবস্থায় বিশ্বজিতের স্ত্রী অসীমা কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি। অভিযোগ, পর পর দুই কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার ‘অপরাধে’ বিশ্বজিৎ অসীমাকে খুনের চেষ্টা করেছে।
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রথম বার মেয়ে হওয়ার পর থেকেই বিশ্বজিতের আচরণ বদলে যায়। স্ত্রীর উপরে সে অত্যাচার শুরু করে। দ্বিতীয় বার কন্যাসন্তান হওয়ার পরে সে অত্যাচার চরমে ওঠে।’’
অভিযোগ, বুধবার রাতে অসীমার বাবার বাড়ির লোকজন জানতে পারেন, অসীমাকে বেধড়ক মারধর করছে বিশ্বজিৎ। খবর পেয়ে অসীমার তিন কাকা কৃষ্ণনগরে ছুটে যান। সেখান থেকে শান্তিপুরের বাড়িতে নিয়ে আসা হয় অসীমাকে। রবিবার রাতে সেখানে আসে বিশ্বজিৎ। একসঙ্গে খাওয়া দাওয়াও করে।
অসীমার কাকা তপন পাল বলেন, ‘‘এক বারের জন্যও সন্দেহ হয়নি যে, অসীমাকে শেষ করে দেওয়ার মতলব নিয়ে এসেছে বিশ্বজিৎ। সকলের সঙ্গে কী ভাল ব্যবহার করল! অসীমার কাছে খাবার চাইল। আমরা ভাবলাম সব বুঝি ঠিকঠাক হয়ে গেল।”
অভিযোগ, রাত তিনটের সময় আচমকা ঘরের ভিতর থেকে অসীমার ছোট মেয়ের কান্নার শব্দে সকলের ঘুম ভেঙে যায়। সকলে ছুটে গিয়ে দেখেন, বিশ্বজিৎ পালিয়ে যাচ্ছে। আর ঘরের ভিতরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন অসীমা। তাঁকে জড়িয়ে আতঙ্কে কেঁদে চলেছে তাঁর বছর তিনেকের মেয়ে। পড়শিদের অভিযোগ, মানুষ এমন নৃশংস হতে পারে! মেয়েটার মুখে ইট দিয়ে যে ভাবে মেরেছে তা দেখলে শিউরে উঠতে হচ্ছে।
প্রায় সাত বছর আগে শান্তিপুরের ঘোড়ালিয়া বাইপাসপাড়ার বাসিন্দা অসীমার সঙ্গে বিয়ে হয় কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণি গোডাউনপাড়ার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ পালের। বিশ্বজিৎ স্থানীয় একটি মিষ্টির দোকানে কাজ করে। প্রথমে তেমন কোনও অশান্তি না হলেও বিয়ের দু’বছর পরে প্রথম কন্যাসন্তান হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় অত্যাচার। দ্বিতীয় বার কন্যা হওয়ার পরে সে অত্যাচার আরও বেড়ে যায়।