প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে একের পর এক পথ দুর্ঘটনায় তিনি যে উদ্বিগ্ন তা একাধিক প্রশাসনিক সভায় জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুর্শিদাবাদের বালিরঘাটে বাস দুর্ঘটনার পরে তিনি গিয়েছিলেন ঘটনাস্থলে। গত সপ্তাহে নদিয়ার সভায় জেলা পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়াকে দাঁড় করিয়ে রাস্তার অবস্থা এবং দুর্ঘটনার বাড়বাড়ন্ত নিয়ে ভর্ৎসনা করেছেন। গত সোমবার মুর্শিদাবাদেও ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইভ’ প্রসঙ্গ তুলে দুর্ঘটনা রুখতে কী-কী ব্যবস্থা নিতে হবে তার বিস্তারিত নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসনকে।
অথচ, ঠিক তার পর দিনই মুর্শিদাবাদে তিনটি পৃথক দুর্ঘটনায় দু’টি শিশু ও এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। জেলা প্রশাসন কর্তারা আক্ষেপ করে বলছেন, রাস্তাঘাট সারিয়ে, ফাইন নিয়ে বা স্পিড ব্রেকার বসিয়ে কিছু দুর্ঘটনা হয়তো রোখা যাবে, কিন্তু মানুষ সচেতন না-হলে সব ঘটনা আটকানো অসম্ভব।
বেলডাঙার কাজিসাহা এলাকায় মঙ্গলবারের দুর্ঘটনার জন্য কিন্তু দায়ী ছিল খারাপ রাস্তা-ই। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রাস্তা খারাপ থাকায় ভাঙাচোরা অংশ এড়িয়ে ভাল অংশ দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল একটি টোটো আর একটি ট্রাক্টর। সেটা করতে গিয়েই মুখোমুখি চলে আসে তারা। নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ট্রাক্টারটি টোটোকে ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলেই মারা যায় টোটোর যাত্রী পাঁচ বছরের সাবিনা সুলতানা। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় ছ’ বছরের উঞ্জিলা খাতুনের। গুরুতর আহত ৩ জন। এর মধ্যে টোটোর চালক রয়েছেন। ট্রাক্টরচালক পলাতক। দুর্ঘটনার পর এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়। বেলডাঙা থানা থেকে পুলিশ আসে। টানা আধ ঘন্টা বেলডাঙা আমতলা সড়ক রুদ্ধ হয়ে যায়।
দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে নবগ্রাম থানার সোদপুরের কাছে নবগ্রাম-পাঁচগ্রাম রাজ্য সড়কের উপরে। পরিচিত এক জনের বিয়েতে বরযাত্রী হিসাবে গিয়েছিলেন নিমগ্রাম বেলুড় গ্রামের বাপি শেখ (২৭)। বিয়েবাড়ি থেকে মোটরবাইক চালিয়ে ফেরার সময় পিছন থেকে পাথরবোঝাই ডাম্পার তাঁকে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলে তাঁর মৃত্যু হয়। তবে মোটরবাইকে তাঁর পিছনে বসা আরোহী কোনওক্রমে রক্ষা পেয়েছেন। ডাম্পারটিকে আটক করা হলেও চালক ও খালাসি পালিয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে খড়গ্রাম থানার শেরপুর-বিষ্ণুপুর রাজ্য সড়কের উপর বাউতপাড়ায় রাস্তার পাশে একটি গাছে ধাক্কা মেরে নয়ানজুলিতে উল্টে যায় একটি বেসরকারি বাস। কিন্তু নয়ানজুলিতে অল্প জল থাকায় যাত্রীদের পরিণতি দৌলতাবাদের ঘটনার মতো হয়নি। তবে ছয়-মহিলা সহ ১৬ জন জখম হয়েছেন।