—ফাইল চিত্র
নাগরিকত্ব নিয়ে বিজেপি-র প্রচারের পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তায় উদ্বাস্তুদের অনেকেই খুশি।
সোমবার রানাঘাট শহর থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে হবিবপুর ছাতিমতলার মাঠে মমতার জনসভায় রানাঘাট শহর, শহর-লাগোয়া উদ্বাস্তু শহর কুপার্স ক্যাম্প নোটিফায়েড, তাহেরপুরের মতো উদ্বাস্তু-প্রধান এলাকা থেকে অনেকে উপস্থিত হয়েছিলেন। মতুয়াদের উপস্থিতিও বেশ ভাল ছিল। সভা শেষে তাঁদের অনেকেই বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের উদ্বাস্তু মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেলেন। সেটা উদ্বাস্তু মানুষের কাছে ক বড় পাওনা। এটি বাস্তবায়িত হলে উদ্বাস্তু শহরের মানুষের সমস্যা থাকবে না।’’
মুখমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘এ রাজ্যের উদ্বাস্তুদের নিঃশর্ত দলিল দেওয়া হবে। তাঁরা যেখানে যে অবস্থায় রয়েছেন, সেখানের দলিল পাবেন। ওই সব এলাকার দেড় লক্ষ পরিবারকে পাট্টা দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে ক্যাবিনেটে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কলকাতাতেও অনেক উদ্বাস্তু কলোনি রয়েছে।” পাশাপাশি রাস্তাঘাট, জল, নিকাশির যে সব সমস্যা রয়েছে সেগুলোর সমাধান করে দেওয়ার কথাও তিনি বলেছেন।
কুপার্স শহর তৃণমূলের সভাপতি তথা কুপার্স নোটিফায়ের্ডের ভাইস চেয়ারম্যান দিলীপ দাসের কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ঠিক কথাই বলেছেন। আমরা তো এ দেশের নাগরিক।’’ হেরপুর শহর তৃণমুলের সভাপতি সত্যেন্দ্র নারায়ণ ঘোষ বলেন, “এনআরসি নিয়ে বিজেপি মানুষের নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছিল। সেই দুশ্চিন্তা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মানুষকে মুক্ত করেছেন।” আর ফুলিয়া টাউনশিপ পঞ্চায়েতের প্রধান উৎপল বসাকের বক্তব্য, “পাট্টা দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এতে সকলে দুশ্চিন্তামুক্ত হয়েছেন।”
এর আগে, গত ২৬ নভেম্বর উদ্বাস্তু শহরে এসে নাগরিকত্বের কথা বলেছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি এবং সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, “বিজেপি ক্ষমতায় এলে এখানকার সব উদ্বাস্তুকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। আমাদের উপর ভরসা রাখুন।” সে দিনও কিন্তু তাঁর মুখে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা শুনেও সভায় অনেক হাততালি পড়েছিল।
এ ব্যাপারে রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী কী বলেন ভেবে বলেন না। সবাই যদি নাগরিক হবেন, তা হলে উদ্বাস্তুরা নাগরিকত্বের জন্য আন্দোলন করছেন কেন? রেল পুলিশ কেন এ দেশের প্রমাণপত্রের জন্য মানুষকে হয়রানি করছে? ভোটাধিকার পেতে কেন ৭১ সালের আগের দলিল চাওয়া হয়? পুলিশ ভেরিকেফিকেশনের জন্য পুলিশ ওই বছরের দলিল দেখতে চায় কেন?” তিনি আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী কল্পতরু হয়ে গিয়েছেন। মতুয়াদের নিয়ে তিনি কিছু করেননি।”