—ফাইল চিত্র।
তিনি ‘প্রধান বক্তা’ বলে প্রচার করে জনসভা আয়োজন করেছিল তৃণমূল। অথচ অন্য নেতারা উপস্থিত থাকলেও সোমবার কালীগঞ্জের মাটিয়ারিতে রামসীতা মন্দিরের মাঠে জনসভায় এলেনই না তৃণমূলের নদিয়া জেলা সভানেত্রী মহুয়া মৈত্র। তিনি ব্যস্ত রইলেন দক্ষিণ নদিয়ায় কয়েকটি কর্মিসভায়, যার মধ্যে শিলিন্দায় কিছু ক্ষুব্ধ কর্মী সভা ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন।
রবিবার গয়েশপুরের কর্মিসভা থেকেই বিতর্ক তাড়া করেছে মহুয়াকে। একে তো সুকান্ত সদনে কর্মিসভার আগেই শহর তৃণমূল সভাপতি সুকান্ত চট্টোপাধ্যায়কে ‘বহিরাগত’ আখ্যা দিয়ে বিক্ষোভ দেখান দলেরই বেশ কিছু কর্মী-সমর্থক। তাঁদের বক্তব্য, মাসখানেক আগে মিন্টু দে-কে সরিয়ে তাঁকে সভাপতি করা হলেও তিনি কেবলমাত্র গয়েশপুরের ভোটার। সপরিবারে কল্যাণীতে থাকেন। ব্যবসায়িক কারণে কল্যাণী মেন স্টেশনের কাছে ডিসি বিল্ডিং-এর সামনেই লোকজন নিয়ে সময় কাটান। গয়েশপুরের কারও প্রয়োজন হলে সেখানে যেতে হয়।
মহুয়া বিক্ষোভকারীদের ধমকে সভাস্থলে চলে যান। সেখানে আবার তাঁর রোষের মুখে পড়েন কিছু সংবাদকর্মী। একটি সংবাদপত্র ও দু’টি টিভি চ্যানেল ছাড়াও কয়েকটি নিউজ় পোর্টালের কর্মীরা সেখানে ছিলেন। মহুয়া শুধু যে তাঁদের কর্মিসভা থেকেল বেরিয়ে যেতে বলেন তা-ই নয়, মাইকে তাঁকে ‘দু’পয়সার প্রেস’ বলে কটাক্ষ করতেও শোনা যায়। এই নিয়ে ব্যাপক শোরগোল হওয়ায় এবং সোমবার প্রেস ক্লাব, কলকাতা লিখিত বিবৃতিতে ধিক্কার দেওয়ার পরে টুইট করে মহুয়া ক্ষমাপ্রার্থনা করেন। যদিও সেই সঙ্গেই তাঁর দাবি, তিনি সংবাদমাধ্যমে মুখ দেখাতে চাওয়া এক শ্রেণির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কথাটা বলেছিলেন এবং দুঃখজনক হলেও সেটা ‘ঠিক কথা’।
এর পরে মহুয়া এ দিনের জনসভায় এসে এসে কী বলতে পারেন, তা নিয়ে দলের মধ্যেই জল্পনা ছিল। কিন্তু তাঁর বদলে কারামন্ত্রী তথা জেলা কমিটির চেয়ারম্যান উজ্জ্বল বিশ্বাস, স্থানীয় বিধায়ক হাসানুজ্জামান শেখরা সভায় বক্তৃতা করেন। এ নিয়ে দলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের একাংশ ক্ষুব্ধও।
তবে তৃণমূলের কালীগঞ্জ ব্লক সভাপতি দেবব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রধান বক্তা হিসেবে মহুয়া মৈত্রের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। ভুল করে কিছু কর্মী ওটা করে ফেলে। ওঁর আসার কথা ছিল না।” মন্ত্রী উজ্জ্বল বলেন,“মহুয়া আমাকে বলেছেন যে জেলার দক্ষিণে কর্মসূচিতে থাকবেন বলে কালীগঞ্জে আসতে পারছেন না।”
তৃণমূল ও স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, এদিন চাকদহ ব্লকের শিলিন্দা ১ ও ২, তাতলা১ ও ২ এবং দুবড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বুথ ভিত্তিক কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সব জায়গায় জেলা সভাপতি সাংসদ মহুয়া মৈত্র উপস্থিত ছিলেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, কৃষ্ণগোপাল হাইস্কুলে শিলিন্দা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মিসভায় তাঁদের বলতে দেওয়া হচ্ছে না অভিযোগ করে কয়েক জন কর্মী সভা ছেড়ে বেরিয়ে যান। পরে চাকদহ ব্লক তৃণমূল সভাপতি দিলীপ সরকার অবশ্য বলেন, “সব জায়গাতেই শান্তিপূর্ণ ভাবে সভা হয়েছে। শিলিন্দা ১ অঞ্চলের কয়েক জন কর্মী কিছু বলতে চাইছেন। পরে তাঁদের বক্তব্য শোনা হবে।”