নিজস্ব চিত্র
কোথাও তারস্বরে মাইক বাজিয়ে চলছে সরস্বতী পুজো। কোথাও চলছে সাত দিনের কীর্তন। দরজা-জানলা বন্ধ করেও রেহাই মিলছে না। অভিযোগ, শহরগুলিতে মাইকের আওয়াজ কম থাকলেও মফস্সলে বা প্রত্যন্ত গ্রামে দাপট দেখাচ্ছে মাইক। ফলে, শেষ বেলায় বইয়ে চোখ বোলাতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। চিন্তায় পড়েছেন অভিভাবকেরাও।
আজ, মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। প্রতি বছরের মতো এ বছরও মাইক বাজানো নিয়ে বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করেছে প্রশাসন। কিন্তু সেই নিষেধ মানছে কে? কৃষ্ণনগর, চাকদহ, রানাঘাট, শিমুরালি, পালপাড়ার মতো এলাকায় সরস্বতী পুজো ধুমধাম করে হলেও মাইকের দিকে বিশেষ নজর ছিল পূজাকমিটিরগুলির। কিন্তু মফস্সল এলাকায় সে সবের তোয়াক্কা নেই। তেমনই অভিযোগ আনছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেথুয়াডহরিতে বিভিন্ন সরস্বতী পুজো মণ্ডপে রাত ১১টা পর্যন্ত তারস্বরে মাইক বেজেছে। সেই সঙ্গে চটুল হিন্দি গান। নাকাশিপাড়ার গোটপাড়ার সরডেঙাতেও বেশ জোরে মাইক বেজেছে। বেথুয়াড়হরি বিডিও অফিস লাগোয়া এলাকায় কীর্তন শুরু হয়েছে সোমবার। চলবে সাত দিন। মাইকের আওয়াজ এতটাই যে, বাড়ির জানালা দরজা লাগিয়েও রেহাই মিলছে না। কালীগঞ্জের ভুড়লিয়া গ্রামে সরস্বতী পুজোর দিন থেকে চলছে নানা অনুষ্ঠান। সোমবার বসে বাউলের আসর। তাই মাইকের সংখ্যাও বাড়ানো হয়।
স্থানীয় এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অর্পিতা কর্মকার বলেন, ‘‘এমনিতেই সরস্বতী পুজোর মাইকে আওয়াজে নাজেহাল। তায় শুরু হয়েছে কীর্তন। কানে হাত চাপা দিয়ে আর কত ক্ষণ পড়ব?’’ বেথুয়াডহরির এক পরীক্ষার্থীর অভিভাবক অচিন্ত্য কর্মকার বলেন, ‘‘সরকার নির্দেশিকা জারি করলেও তা পালন করার কোনও সদিচ্ছাই যেন নেই স্থানীয় প্রশাসনের। প্রশাসন রাশ টেনে ধরলে দেখলে পরীক্ষার্থীদের উপকার হয়।’’
আর এক পরীক্ষার্থী সুজয় ঘোষ বলেন, ‘‘পরীক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে মাইকের আওয়াজ যদি একটু কম করা হয়, তা হলে উপকার হয়।’’
দু’এক জায়গায় অবশ্য ব্যতিক্রম দেখা গিয়েছে। করিমপুর, তেহট্ট পলাশিপাড়ায় রবিবার মাইক বাজলেও সোমবার আওয়াজ কম ছিল। করিমপুরের নাটনায় বেশ কয়েকটি পুজো কমিটি বরাবরই মাইকের আওয়াজ কম রেখেছিল।
যদিও নাকাশিপাড়া ও কালীগঞ্জ থানার পুলিশকর্মীদের দাবি, মাইকের কোনও আওয়াজ তাঁরা শুনতে পাননি। তবে কোনও অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবেন।