রঙ্গ-ব্যঙ্গ-টিপ্পনী-শ্লেষে মুখরিত ভোটের মরসুম

হরি সিং ও সুব্রত সাহার ওই দু’টি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বহরমপুরের এক বাসিন্দা  বলছেন, ‘‘ব্যাপারটা মোটেই হাসির নয়। কিন্তু এমন ভাবে দু’টি ঘটনা ঘটেছে যে না হেসে উপায়ও নেই!’’

Advertisement

শুভাশিস সৈয়দ

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৯ ০১:০০
Share:

কপ্টার থেকে নামতে গিয়ে পড়ে গেলেন সুব্রত সাহা।

ভোটের বঙ্গে রঙ্গের অভাব নেই!

Advertisement

জুতোর তলায় রাবারের সোল না থাকায় হেলিকপ্টার থেকে নামতে গিয়ে পিছলে মাটিতে পড়ে যান তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি সুব্রত সাহা।

বঙ্গে না হলেও উটের পিঠে চড়ে ভোট প্রচার করতে গিয়ে উটের পিঠ থেকে সটান মাটিতে পড়ে যান রাজস্থানের কংগ্রেসের প্রার্থী হরি সিং।

Advertisement

হরি সিং ও সুব্রত সাহার ওই দু’টি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বহরমপুরের এক বাসিন্দা বলছেন, ‘‘ব্যাপারটা মোটেই হাসির নয়। কিন্তু এমন ভাবে দু’টি ঘটনা ঘটেছে যে না হেসে উপায়ও নেই!’’

দিন কয়েক আগে বড়ঞার ডাকবাংলো হাট মাঠে জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা পরিবহণমন্ত্রীর সভা ছিল। বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী অপূর্ব সরকারের হয়ে হেলিকপ্টারে প্রচারে গিয়েছিলেন শুভেন্দু। বড়ঞা থানার পারশালিকা মাঠে কপ্টার থেকে নামতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যান সুব্রত সাহা। তিনি বলছেন, ‘‘হেলিকপ্টার থেকে নামার সময়ে কোনও সিঁড়ি ছিল না। একটা মোটা রডের উপরে পা রেখে নামতে গিয়ে কোনও ভাবে পা পিছলে গিয়ে পড়ে যাই। আসলে আমার জুতোর তলায় রবার সোল ছিল না বলেই ওই বিপত্তি।’’ দ্রুত তিনি উঠেও পড়েন। কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে ঘুরছে মোবাইলে।

তবে পড়ে গিয়ে ‘শিক্ষা’ নিয়েছেন সুব্রত। এখন তিনি রাবারের সোল দেওয়া চপ্পল পরে কপ্টারে উঠছেন। তিনি বলছেন, ‘‘আমার ওই ঘটনার পরে শুভেন্দু অধিকারীও এখন সতর্ক হয়ে হেলিকপ্টার থেকে নামছেন।’’

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

প্রচারে বেরিয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল অপূর্ব সরকারকে। শক্তিপুরে হেঁটে প্রচার করার সময়ে এক প্রবীণকে দেখে হাত মেলানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু আচমকা সেই প্রবীণ ভয়ঙ্কর চিৎকার করতে শুরু করেন। দ্রুত সেখান থেকে সরে গিয়ে কোনও রকমে পরিস্থিতি সামাল দেন অপূর্ব। কিন্তু সেই ছবি তুলে কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছে। এ ব্যাপারে অপূর্ব ঘনিষ্ঠ মহলে জানান, ওই প্রবীণ যে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ তা তিনি বুঝতে পারেননি।

এ দিকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি ভিডিয়ো এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে। যেখানে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীকে জয়ী করার আবেদন জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ভিডিয়োতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এক জায়গায় বলতে শোনা গিয়েছে, ‘বিজেপির হাত শক্তিশালী করবার জন্য...।’

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

তা নিয়েও জলঘোলা চলছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বীরভূমের সিপিএমের প্রার্থী রেজাউল করিম লিখেছেন—‘বিজেপির হাত শক্ত করতে??? এই তো সেটিং প্রকাশ্যে এনে ফেললেন মাননীয়া !!’ সিপিএমের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যও বলছেন, ‘‘মোদী ও দিদির মধ্যে গোপন আঁতাত রয়েছে বলে আমরা এত দিন ধরে যে অভিযোগ করে আসছিলাম, ওই ভিডিয়ো তার প্রমাণ দিয়েছে।’ তৃণমূলের এক নেতা অবশ্য বলছেন, ‘‘দিদি নিছকই ওটা ভুল করেই বলে ফেলেছেন।’’ তা হলে সেই ভুলটা শুধরে দিলেন না কেন? ওই নেতার জবাব, ‘‘দলের সবার ঘাড়ে তো একটা করেই মাথা, তাই না?’’

আরও একটা ভিডিয়ো ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেছেন—‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে হাত/বিজেপি’র বাজিমাত।’

এ সব দেখে অধীর চৌধুরী বলছেন, ‘‘দিদির কাছে বিজেপি অচ্ছুৎ নয়। তাই ভাল বিজেপি-খারাপ বিজেপি বলে তিনি ভাগ করেন। তাই ভুল করে নয়, তাঁর মনের কথা মুখ দিয়ে বেরিয়ে এসেছে। তিনি ভুল করে বললে তো সংশোধন করতেন। কিন্তু তা তো করেননি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement