গনগনে সেই হারানো দিন ঝলসে উঠল ঠান্ডা-ঘরে

মোশারফ হোসেন আর শাওনি সিংহ রায়। কিছু দিন আগেও ‘দাদা’র ছায়ায় নিশ্চুপে দাঁড়িয়ে থাকা প্রশ্নহীন মানুষ দু’টো এখন পাল্টা প্রশ্ন তুলছেন। রাজনীতির উঠোনে বদলে যাওয়া ঠিকানায় ওঁরা বিরোধী ঠিকই, তবু এই সব গনগনে দিনে এক চিলতে পুরনো দিন বুঝি ঝলসে ওঠে।

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

নওদা শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৯ ১১:০৪
Share:

মোশারফ হোসেন ও শাওনি সিংহ রায়।

বাইরে মাঠ-ঝলসানো রোদ্দুর। উত্তাপ বেঁধে রাখা ঘরে হারনো দিনও বুঝি ঝলসে উঠছে থেকে থেকে। ওঁরা বসে রয়েছেন, পাশাপাশি। বাইরের উত্তাপ ফুঁড়ে কিছু শীতল দিন বুঝি চুপিসাড়ে ঢুকে পড়ছে ঘরে।

Advertisement

‘‘কী হাল হল মানুষটার বলুন তো, পাশে একটা লোক নেই। খারাপই লাগছে জানেন!’’ কান থেকে ফোন নামিয়ে তাঁর পাশে বসা মানুষটাও বিড়বিড় করছেন, ‘‘ভাবা যায় না! কী দেখেছি দাদাকে, আর এখন কী দেখছি।’’

মোশারফ হোসেন আর শাওনি সিংহ রায়। কিছু দিন আগেও ‘দাদা’র ছায়ায় নিশ্চুপে দাঁড়িয়ে থাকা প্রশ্নহীন মানুষ দু’টো এখন পাল্টা প্রশ্ন তুলছেন। রাজনীতির উঠোনে বদলে যাওয়া ঠিকানায় ওঁরা বিরোধী ঠিকই, তবু এই সব গনগনে দিনে এক চিলতে পুরনো দিন বুঝি ঝলসে ওঠে।

Advertisement

একদা অধীর চৌধুরীর ডান হাত মোশাররফ এখন জেলা পরিষদের সভাধিপতি। মুর্শিদাবাদ কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের টিকিটে জিতে আসা শাওনি এখন তৃণমূলের মহিলানেত্রী।

বিরোধী পক্ষে বসেও মঙ্গলবার তাঁদের পুরনো দিনে ফিরতে দেখা গেল।

এক সময়ের অধীরের খাস লোক বলে পরিচিত এই দুই প্রভাবশালী নেতা-নেত্রী এ দিন ঘাপটি মেরে বসেছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফের বাড়িতে। নিশ্চুপ পাখা, চিল মুড়ে চলছে এসি, সামনে গ্রিন-চায়ের নিথর কাপ।

অধীরের দুই সেনাপতি বলছেন, ‘‘জানেন, মানুষটা আমাদের প্রাপ্য সন্মানটা দিলে, আজ হয়ত এমন দশা হত না। চারপাশ থেকে এক একে সকলেই সরে যেত না।’’

অনর্গল ফোন আসছে। পাক্কা প্রাক্তন ‘দাদা’র ঢঙে উত্তর দিচ্ছেন মোশারফ। শুধু অবস্থানটা বদলে গিয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনেও অধীরের সঙ্গে আঠার মতো লেগে থাকা মানুষটা সরে গেলেও বিড়বিড় করছেন, ‘‘এমনটা না হলেই বোধহয়....।’’ ফোন বেজে ওঠে। দাদার ঢঙেই কানে তুলে নেন ফোন, ‘‘বল...।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement