তৈরি হচ্ছে সব দলের কেক। —নিজস্ব চিত্র।
যদি কেউ প্রশ্ন করেন, ‘‘তৃণমূল, বিজেপি, সিপিআইএম আর কংগ্রেসের মধ্যে মিল কোথায়?’’
শান্তিপুরের মানুষ হলে এখন একবাক্যে উত্তর দেবেন— ‘‘সবাই খুব মিষ্টি!’’
শান্তিপুরে এই বছর তৃণমূল, বিজেপি, কংগ্রেস আর সিপিআইএম চার দলের চার সমর্থকের থেকে তাঁদের দলের প্রতীক আঁকা কেক তৈরির বরাত পেয়েছেন শান্তিপুরের বাসিন্দা শুভজিতা দাস নন্দী।
কেকের উপরে গেরুয়া, সবুজ ক্রিম দিয়ে কোনওটায় আঁকা হয়েছে পদ্ম, কোনওটায় আবার ঘাসফুল। বিজেপি আর কংগ্রেসের দুই সমর্থকের জন্মদিন উপলক্ষে এই কেক বানাচ্ছেন তাঁর বন্ধুরা। সর্বানন্দী পাড়ার বকুলতলার ঠেকের কংগ্রেসের অন্ধ-ভক্ত ভক্ত ঘোষের জন্মদিনে বন্ধুরা ভেবেছিলেন নতুন কিছু করতে হবে। ওই ঠেকেরই অমিত কর্মকার বলেন, ‘‘চারদিকে ভোটের হাওয়া। তাই বন্ধুর জন্মদিনে এ বার বকুলতলায় হাত চিহ্ন আঁকা কেক কাটা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম সবাই।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আর হাত চিহ্নের মনে-প্রাণে সমর্থক ভক্ত বলছেন, ‘‘স্বপ্নেও ভাবিনি এমন একটা উপহার পাব! কেকের উপর হাত চিহ্ন দেখে আমার জীবন সার্থক।’’
আবার, বিজেপি সমর্থক অমর দাস বলছেন, ‘‘আমাদের ঠেকে এক জন বিজেপি সমর্থক আছেন। সরকারি চাকরি করেন। নাম বললে কখন কী কোপের মুখে পড়বেন! তাঁরই জন্মদিনে পদ্মফুল আঁকা কেক কেটে তাঁকে চমকে দেব আমরা।’’ তৃণমূল সমর্থক নবকুমার তলাপাত্র অবশ্য দলের প্রতীক আঁকা কেক বানাতে দিয়েছেন খোদ প্রার্থীর হাত দিয়ে কাটানোর উদ্দেশ্যে। নবকুমার বলেন, ‘‘রূপালী বিশ্বাসের এই ভোটেই রাজনীতিতে প্রবেশ। তাঁর হাত দিয়ে কেক কাটিয়ে জয়ের শুভ সূচনা হবে, এই আশাতেই বানানো হয়েছে।’’
অন্যদিকে, সিপিআইএম সমর্থক মিলন দাস বলেন, ‘‘প্রতি বছর নববর্ষে বাড়িতে মিষ্টিমুখ হয়। এ বছর কেক বানাতে কেক-দিদির বাড়ি গিয়েছিলাম। ওখানে গিয়ে নানা রাজনৈতিক দলের চিহ্ন আঁকা কেক দেখে আমিও দলের প্রতীক আঁকা একটা কেকের অর্ডার দিই।’’ তাঁর মতে, শুধুমাত্র দলকে ভালবেসেই এটা করেছেন।
ঠান্ডাঘরে বসে একটা জন্মদিনের কেকে নকশা আঁকতে আঁকতে কেক দিদিমণি শুভজিতা বলেন, ‘‘সব দলগুলো যদি সত্যি লড়াই ভুলে আমার বানানো কেকের মতো মিষ্টি সম্পর্ক গড়ে তোলে, কী ভালই না হয় তা হলে।’’