মহুয়ার মর্জি নিয়ে নালিশ দলনেত্রীকে  

বিধায়ক এবং ব্লক সভাপতিদের কিছুই জানানো হচ্ছে না। বরং তাঁদের উপেক্ষা করেই অঞ্চলে-অঞ্চলে প্রচার করছেন প্রার্থী।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৯ ০১:৪১
Share:

প্রচারে তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র। ফাইল চিত্র।

বিধায়ক এবং ব্লক সভাপতিদের কিছুই জানানো হচ্ছে না। বরং তাঁদের উপেক্ষা করেই অঞ্চলে-অঞ্চলে প্রচার করছেন প্রার্থী। বুধবার নবান্নে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে নদিয়া জেলার দুই বর্ষীয়ান নেতা কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে এমনটাই অনুযোগ করেছেন বলে খবর।

Advertisement

তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, এ দিন বৈঠকে তেহট্টের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত ও নাকাশিপাড়ার বিধায়ক কল্লোল খাঁ নেত্রীর কাছে এই অনুযোগ করেন। যদিও বৈঠকে উপস্থিত বিধায়কদের একাংশের দাবি, মমতা সে কথায় তেমন আমল না দিয়ে কৃষ্ণনগর পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান অসীম সাহাকে সকলের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কর্মসূচি তৈরির নির্দেশ দেন। তবে তিনি এ-ও বলেছেন যে কাউকে বাদ রাখা যাবে না। বিধায়ক ও ব্লক সভাপতিদের নিয়ে ভোট করতে হবে। কেন নদিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে তাঁকে বারবার বৈঠক করতে হচ্ছে তা নিয়েও এ দিন উষ্মা প্রকাশ করেছেন নেত্রী।

কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা হওয়া ইস্তক জোরকদমে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন করিমপুরের বিধায়ক মহুয়া। কিন্তু স্থানীয় ব্লক নেতৃত্ব ও বিধায়কদের এড়িয়ে সরাসরি বুথ সভাপতিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মহুয়া নানা কর্মসূচি নিচ্ছেন বলেও দলে ক্ষোভ ধোঁয়াচ্ছে। এ দিন দুই নেতার মুখ দিয়ে সেই অভিযোগই বেরিয়ে এসেছে বলে দলীয় সূত্রের খবর।

Advertisement

জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর অবশ্য রাতে এমন কোনও প্রসঙ্গ উত্থাপনের কথা অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “বৈঠকে এমন কোনও নেতিবাচর প্রসঙ্গই ওঠেনি। আমি কেন, কেউই এই ধরনের কোনও কথা বলেনি।” মহুয়া বলে‌ন, “বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, আমি জানি না। তা ছাড়া দলের বৈঠক নিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে কোনও মন্তব্যও করব না। শুধু এটুকু বলছি, জনসাধারণের মধ্যে থেকেই আমি ভোটটা করছি।”

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে সমন্বয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কৃষ্ণনগরের প্রাক্তন পুরপ্রধান অসীম সাহাকে। রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব রয়েছে জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দীপক বসুর। সকলের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের প্রচারের কর্মসূচি তৈরি করার কথা। এ ছাড়াও প্রচার কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রানাঘাটের বিদায়ী সাংসদ তাপস মণ্ডলকে। রানাঘাটের বর্ষীয়ান নেতা শঙ্কর সিংহকে বিশেষ দায়িত্ব পালন করতেও বলা হয়েছে। রানাঘাট দক্ষিণ, উত্তর-পূর্ব ও উত্তর-পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় দায়িত্বও তাঁরই।

তৃণমূল সূত্রের খবর, রানাঘাটের প্রার্থীর সঙ্গে জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুণ্ডু ও চাকদহের বিধায়ক তথা মন্ত্রী রত্না ঘোষ করকে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন দলনেত্রী। শান্তিপুর পুরসভার দায়িত্ব পুরপ্রধান অজয় দে ও বাকি ছ’টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দায়িত্ব বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যকে দেওয়া হয়েছে। এলাকায় জনপ্রিয়তা হারাচ্ছেন বলে ধমক খেতে হয়েছে রানাঘাট উত্তর-পূর্ব কেন্দ্রের বিধায়ক সমীর পোদ্দারকে।

জেলার এক বিধায়কের কথায়, “এই জেলায় যে সমন্বয়ের অভাব আছে তা নেত্রী ভাল করেই জানেন। ভোটে যাতে তার প্রভাব না পড়ে, তার জন্যই তিনি সকলকে ডেকেছিলেন। সকলের দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছেন। সমন্বয়ের অভাব যে মেনে নেবেন না সেটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন।”

বিধায়কদের একটা অংশের দাবি, মমতা নিজে রানাঘাট ও কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে দু’টি করে চারটি সভা করবেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিম ১৪টি সভা করবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement