প্রতীকী ছবি।
এক প্রবীণ মহিলার মৃত্যুর পর শ্মশানে গিয়েছিলেন পাড়ার ছেলেরা। গত ৬ সেপ্টেম্বরের ঘটনা। এর দু’দিন পর জানা গেল, মৃতার করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। প্রায় গোটা পাড়়া সংক্রমণের আশঙ্কায় সিঁটিয়ে আছে।
নবদ্বীপ-লাগোয়া পূর্ব-বর্ধমানের শ্রীরামপুর থেকে নিয়মিত সাইকেল করে মামার বাড়়ি আসত ছেলেটি। দিন-দু’য়েক আগেও সে মামাবাড়ি এসেছিল। সেখানে পাড়ার ক্লাবে সমবয়সীদের সঙ্গে গল্পগুজব করে সে ফিরে যায়। বুধবার সকালে খবর পাওয়া যায় যে, ওই কিশোরের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ। শেষ যে দিন সে মামার বাড়ি এসেছিল সেদিনই হাসপাতালে লালারস পরীক্ষা করতে দিয়েছিল। তার সঙ্গে যারা সে দিন গল্প করেছিল তারা প্রত্যেকে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। কেবলই চিন্তা, করোনা হবে না তো! দু’টি ঘটনাই নবদ্বীপের রাণীর চড়়া অঞ্চলের। সেখানকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাঙালপাড়ার বাসিন্দা বছর ষাটেকের এক মহিলা গত ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান। স্বাভাবিক নিয়মেই মৃতদেহ সৎকার হয়। এর পর মঙ্গলবার রাতে জানা যায়, তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ। শোরগোল পড়ে যায় পাড়ায়। পুরসভার কাছে খবর যায়। মৃতের সরাসরি সংস্পর্শে আসা এবং পরোক্ষে সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি হয়। নবদ্বীপ পুরসভার হেলথ ইনচার্জ তাপস খাঁ বলেন, “এখনও পর্যন্ত মৃতের পরিবারের ১৬ জন এবং পাড়়া-প্রতিবেশী মিলিয়ে আরও ৬০ জনের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে যাঁরা মৃতের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সংস্পর্শে এসেছিলেন। সকলের লালারস পরীক্ষা করা হবে।”
বছর আঠারোর এক তরুণের বাড়ি নবদ্বীপের পাশে উত্তর শ্রীরামপুরে। রাণীর চড়ায় তাঁর মামার বাড়ি। গত শনিবার সে হাসপাতালে লালারস দিয়ে মামাবাড়ি আসে। এলাকার ক্লাবে সমবয়সীদের সঙ্গে গল্পগুজবও করে। সোমবার রাতে তার রিপোর্ট আসে পজিটিভ। এতেও এলাকায় যথেষ্ট আতঙ্ক ছড়়িয়েছে। ওই ক্লাবের তরফে শুভাশিস কংসবনিক বলেন, “আমরা এখনও পর্যন্ত ওই ছেলেটির মামার বাড়ির ৯ জন সদস্য এবং ক্লাবের ১৮ জনের সন্ধান পেয়েছি যাঁরা ওর সংস্পর্শে এসেছিলেন। তাঁদের সকলকে হোম আইসোলেশনে থাকতে বলা হয়েছে। ক্লাবও স্যানিটাইজ করা হয়েছে।” স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বুধবার বিকেল পর্যন্ত নবদ্বীপে মোট করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ১০৮ জন।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)