ভেঙে পড়ছে নদীর পাড়। চৌধুরীপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র
ভাগীরথীর গ্রাসে তলিয়ে যাচ্ছে নদী পাড়ের একের পর এক জমি। জনপদের দিকে ক্রমশ এগিয়ে আসছে নদী। আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। প্রশাসনের তরফে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছেন গ্রামবাসীরা।
শান্তিপুরের হরিপুর পঞ্চায়েতের চৌধুরীপাড়ার এলাকার বাসিন্দারা জানান, শনিবার বিকেলে ওই এলাকায় ভাঙনের কবলে পড়ে তলিয়ে যায় ভাগীরথীর পাড়ের বেশ খানিকটা অংশ। গত বছর থেকেই এই এলাকার নানা অংশে ভাঙন শুরু হয়েছে। একাধিকবার ভাঙনের জেরে নদী পাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকার মাটি ধস গিয়েছে। এখানে নদীর কাছেই জনবসতি রয়েছে। নদী ক্রমশ এগিয়ে আসায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন গ্রামবাসীরা। নদীর ধারেই গ্রামে যাওয়ার অন্যতম রাস্তা। এর আগে সেই রাস্তার একাংশও ভাঙনের কবলে পড়েছে। ভাঙন রোধে এলাকায় স্থায়ীভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী আগে থেকেই রয়েছে গ্রামবাসীদের।
বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এই এলাকায় স্থায়ীভাবে ভাঙন প্রতিরোধে কাজ করার কোনও উদ্যোগ প্রশাসনের তরফে নেওয়া হয়নি। ভাঙন রোধে এখানে স্থায়ী ভাবে ব্যবস্থা না-নেওয়া হলে ভিটেছাড়া হতে হবে বাসিন্দাদের। সম্প্রতি এই এলাকা ঘুরে দেখে গিয়েছেন জেলা সভাধিপতি, জেলাশাসক, মহকুমাশাসক, সেচ কর্তারা। সেই সময়েও প্রশাসনিক কর্তারা এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিলেন। পরে সেচ দফতরের তরফে এলাকায় ভাঙন রোধে প্রাথমিক কাজ শুরু করা হয়। তবে স্থায়ীভাবে কোনো কাজ হয়নি। এরপরেও ভাঙনের কবলে পড়েছে এই গ্রাম।
চৌধুরীপাড়ার বাসিন্দা বিশ্বেশ্বর মাহাতো বলেন, “ভাঙন আমাদের এলাকায় নতুন নয়। তবে ভাঙন রোধে স্থায়ী ভাবে ব্যবস্থা প্রশাসনের তরফে নেওয়া হয়নি। প্রাথমিক কাজ করেছিল সেচ দফতর। কিন্তু তারপরেও ভাঙন চলছে।” শনিবার বিকেলের দিকে ফের ভাঙনের ঘটনা ঘটে এই এলাকায়। নদীর পাড় থেকে মাটিতে বড়সড় ধস নামে। এই ঘটনায় ফের আতঙ্ক ছড়িয়েছে গ্রামবাসীদের মধ্যে। স্থানীয় বাসিন্দা রতন মাহাতো, রাজু মাহাতোরা বলছেন, “প্রশাসনের তরফে যদি স্থায়ী ভাবে কোনও ব্যবস্থা না করা হয় তা হলে যেভাবে নদী এগিয়ে আসছে দিনদিন তাতে আমাদের ভিটেছাড়া হতে হবে।”
স্থানীয় হরিপুর পঞ্চায়েতের সদস্য বীরেন মাহাতো বলেন, “চৌধুরীপাড়া এলাকায় সম্প্রতি একাধিক বার ভাঙনের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। এর আগে এখানে সেচ দফতর কিছু কাজও করেছে।”
প্রশাসনের তরফে অবশ্য সেই কাজ করার আশ্বাস মিলেছে। রানাঘাটের মহকুমা শাসক হরসিমরন সিং বলেন, “বিষয়টি নিয়ে সেচ দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওই এলাকায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”