Kumar Gaurav

স্তব্ধ নাইটে হারিয়ে গিয়েছে কুমার গৌরব

শীত শুরু হতেই গ্রামবাংলায় শুরু হয় নাইট উৎসব। রাত নটা দশটা থেকে শুরু হয়ে ভোর পর্যন্ত চলে এই অনুষ্ঠান।

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

ডোমকল শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:২৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

আসল নাম গৌরব সামন্ত, কিন্তু এখন তাকে প্রায় গোটা রাজ্য চেনে ‘কুমার গৌরব’ নামে। ছোটবেলা থেকেই গান গেয়ে বড় হওয়ার শখ ছিল গৌরবের, ইচ্ছে ছিল টলিউডের সিনেমায় গান গাওয়ার। সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি তার। কিন্তু গান গাওয়া ছাড়েনি গৌরব, কিশোর কুমারের গান গেয়েই তার এখন পরিচিতি কুমার গৌরব নামে। আর কাঁচরাপাড়ার মৌমিতা সরকারের লতা-কন্ঠী হিসেবেই এখন পরিচিতি চারদিকে। শীতের মরসুমে নাইট উৎসবের সৌজন্যে তার কদর কম নয়। প্রায় রাতেই রাজ্যের কোনও না কোনও প্রান্তে নাইট উৎসবে গাইতে হয় তাকে। কিন্তু এ বছর গৌরব মৌমিতাদের ডাক নেই, এখনও পর্যন্ত একটাও বায়না হয়নি অনুষ্ঠানের। আর হবে কি না তা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ আছে তাদের। ফলে করোনা পরিস্থিতিতে এক নতুন সমস্যার সামনে পড়ে থমকে গিয়েছে তাদের জীবন।

Advertisement

শীত শুরু হতেই গ্রামবাংলায় শুরু হয় নাইট উৎসব। রাত নটা দশটা থেকে শুরু হয়ে ভোর পর্যন্ত চলে এই অনুষ্ঠান। তাতে কখনও গান কখনও সিনেমার সংলাপ কখনও আবার হাসির খোরাক জোগাতে কলকাতা বা শহরতলি থেকে ছুটে আসেন ঝাঁক ঝাঁক শিল্পী। বড় শিল্পীদের অনুষ্ঠানের আগেই বেশ কিছুটা সময় তারা জমিয়ে রাখে দর্শকদের। কখন আবার ছোট অনুষ্ঠান হলে তারাই তারকা। কিন্তু এই তারকাদের জীবনে এখন নেমে এসেছে এক নতুন সঙ্কট। গৌরবের কথায়, ‘‘ছোটবেলা থেকেই গান গেয়ে বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম, বড় না হতে পারলেও নাইট উৎসবের সৌজন্যে গান নিয়ে বেঁচে আছি। কিন্তু এবছর যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে আর গান নিয়ে বেঁচে থাকা আর সম্ভব নয়।"

কেবল শহর বা শহরতলি নয়, নব্বইয়ের দশক থেকে নাইট উৎসবের রমরমা হতেই জেলাগুলিতেও গড়ে ওঠে অর্কেস্ট্রা দল বা ব্যান্ড পার্টি। সেখানে রফির কণ্ঠে লতা কণ্ঠে বা কিশোরকণ্ঠ হয়ে গান গেয়ে মনোরঞ্জন করেন শিল্পীরা। রাতভর অনুষ্ঠান করে একজন শিল্পী হাজার থেকে দু'হাজার টাকা আয় করে সংসার চালান। জেলার এক শিল্পী সুব্রত মন্ডল বলছেন, ‘‘শিল্পী হিসেবে বেছে নিয়েছিলাম গানকে। এখন গান ভুলে অন্য কাজ তুলে নিতে হবে কাঁধে পেটের টানে।’’ নদিয়া জেলার করিমপুরের শিল্পী অনিমেষ সরকার বলছেন, ‘‘সারা বছর করিমপুর বাজারে আমাদের একটা ঘর ভাড়া নেয়া থাকে, শীতের আগেই সেখানে জোরকদমে শুরু হয় রেওয়াজ। কিন্তু ঘর ভাড়া না দিতে পারায় ঘরটাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement