কৃষ্ণনগর উইমেন্স কলেজ চত্বরে চলছে ক্লাস। নিজস্ব চিত্র
কিছু ছাত্রী পোস্টার সেঁটে গেট আটকানোয় বাইরের চত্বরে বসেই ক্লাস করলেন কৃষ্ণনগর উইমেন্স কলেজের শিক্ষক ও বাকি ছাত্রীরা। পোস্টার সাঁটানো ওই ছাত্রীরা টিএমসিপি নিয়ন্ত্রিত ছাত্র সংসদের।
দু’দিন আগেই শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান বয়কট করেছিলেন নদিয়ার ওই কলেজের প্রায় সব শিক্ষক। টিএমসিপি নেত্রীদের আনা উপহারও প্রত্যাখ্যান করেন তাঁরা। প্রতিবাদে শুক্রবার কলেজ ভবনের ফটক আটকান টিএমসিপি নিয়ন্ত্রিত ছাত্র সংসদের কিছু সদস্য। গেটে তালা ঝোলানো হয়নি। কিন্তু শিক্ষকদের জবাব না-পাওয়া পর্যন্ত ক্লাস করতে দেওয়া হবে না জানিয়ে গেটে প্ল্যাকার্ড লাগিয়ে দেওয়া হয়। টিএমসিপি নেত্রীরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে সেখানে হাজির ছিলেন। শিক্ষক ও সাধারণ ছাত্রীরা ঢুকতে গেলে বচসা বাধে। তাঁরা আর ঢুকতে পারেননি।
এর পরেই শিক্ষকেরা সামনে মাঠে বসে পড়েন এবং ছাত্রীদের প্রস্তাব দেন, যাঁরা ক্লাস করতে ইচ্ছুক তাঁরা আসতে পারেন। বহু ছাত্রীই শতরঞ্চি জোগাড় করে এনে কলেজ চত্বরের মাঠে ক্লাস করতে বসে পড়েন। সকাল ১১টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত এই চলে। এর পর গেট খোলা হলেও কলেজে আর ক্লাস হয়নি।
নদিয়ার ওই কলেজে দীর্ঘদিন ধরেই অধ্যক্ষ মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সংঘাত চলছে শিক্ষকদের। সেই সুযোগটাই টিএমসিপি কাজে লাগাচ্ছে বলে অভিযোগ। এ দিন তিনি কলেজে ছিলেন না। তবে অধ্যক্ষ বলেন, “কিছু শিক্ষক যে আচরণ ছাত্রীদের সঙ্গে করেছেন, তা কখনও ই শোভন নয়। ওরা তারই প্রতিবাদ করছে।” তা হলে কি তিনি কলেজের গেট আটকে পড়াশোনায় বাধা দেওয়াকে সমর্থন করছেন? মানবী বলেন, ‘‘কে কী করছেন, জানি না। কলেজে যাইনি।’’
কলেজের ছাত্র সংসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক সাবিরা খাতুনও বলেন, “যে ভাবে শিক্ষক দিবসে আমাদের দেওয়া উপহার শিক্ষকেরা আস্তাকুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন, এ তারই প্রতিবাদ।” শিক্ষক সুদর্শন বর্ধন পাল্টা বলেন, ‘‘অধ্যক্ষের ইন্ধনে যে ছাত্রীরা সারা বছর আমাদের অসম্মান করে, শিক্ষক দিবসে তাদের লোকদেখানো উপহার নিতে যাব কেন?’’
ওই কলেজের প্রশাসক পদে রয়েছেন জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত। তিনি জানান, শিক্ষা দফতরকে রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে।