কৃষ্ণনগর -নশিপুর রেলসেতু। নিজস্ব চিত্র।
নির্বাচনী আচরণবিধি কার্যকরী হওয়ার আগেই গত ২ মার্চ কৃষ্ণনগর থেকে নশিপুর রেলসেতুর আনুষ্ঠানিক ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার পরে তিন মাস অতিক্রমের পথে। এ পথে যাত্রিবাহী ট্রেনের যাতায়াত না থাকার কারণে জেলাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ সঞ্চার হচ্ছে।
দীর্ঘ ২০ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে নশিপুর রেলসেতুর কাজ এ বছরের শুরুতেই শেষ হয়। আড়াই মাস ধরে এ পথে নিয়মিত পণ্যবাহী ট্রেন যাতায়াত করলেও রেল মন্ত্রকের তরফ থেকে আজ পর্যন্ত কোনও যাত্রিবাহী ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা করা হয়নি। এবং ঠিক কবে নাগাদ এ পথে ট্রেন চলাচল করবে সে নিয়েও কোনও অগ্রিম খবর তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
জিয়াগঞ্জের বাসিন্দা রঞ্জন চৌধুরী এ প্রসঙ্গ বলেন, “যে দিন নবনির্মিত নশিপুর রেল ব্রিজের লাইনের উপর দিয়ে ট্রেন চলার প্রাথমিক পরীক্ষা হল, সেদিন থেকেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম। এ বার বুঝি দীর্ঘ কুড়ি বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটবে। এই বোধহয় উত্তরবঙ্গে যাওয়ার জন্য দূর পাল্লার বহু ট্রেন এ পথে চলাচল করবে। কাজ শেষ হল, অফিসাররা সবুজ সঙ্কেত দিয়ে গেলেন, কিন্তু দেখতে দেখতে বেশ কয়েক মাস কেটে গেল এখন পর্যন্ত কোনও প্যাসেঞ্জার ট্রেনও চালু হল না। এই রেলসেতুর সঙ্গে মুর্শিদাবাদবাসীর এক আবেগ জড়িয়ে আছে। সেই সঙ্গে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগের পথ প্রশস্ত ও সুগম হবে। কিন্তু বুঝতে পারছি না, কোনও এক অজ্ঞাত কারণে আবার এই কাজ থমকে গেল কি-না!”
এ প্রসঙ্গে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, “এই মুহূর্তে ঠিক নির্দিষ্ট ভাবে বলা যাচ্ছে না, এ পথে কবে থেকে যাত্রিবাহী ট্রেন চলাচল করবে। কারণ এ বিষয়ে রেল মন্ত্রক থেকে কোনও সূচনা এখন পর্যন্ত এসে পৌঁছয়নি।”
জেলার একাংশের মতে, লোকসভা ভোটকে কেন্দ্র করে তড়িঘড়ি রেলসেতুর উদ্বোধন করেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। আড়াই মাস অতিক্রম করলেও তাঁর ‘গ্যারেন্টি কার্ড’ কার্যত সময়ের যাঁতাকলে এক্সপেয়ারির পথে। মুর্শিদাবাদ রেলওয়ে প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক আমিনুর রহমান বলেন, “যাত্রিবাহী ট্রেন চালানোর জন্য মাস খানেক আগে রেল মন্ত্রককে আমাদের তরফ থেকে লিখিত অনুরোধ জানানো হলেও তার কোনও প্রতিক্রিয়া আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। আগামী এক মাসের মধ্যে যদি এ পথে যাত্রিবাহী ট্রেন চলাচল না করে, তাহলে শান্তিপূর্ণ ভাবে বৃহত্তর আন্দোলনের পথ বেছে নেব। প্রয়োজনে অনশনের পথ বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”