আগ্নেয়গিরির শিখরে সত্যরূপ (হলুদ জামা)। নিজস্ব চিত্র
দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে পৃথিবীর সর্বোচ্চ জীবন্ত আগ্নেয়গিরির শিখর ছুঁলেন ‘সপ্তশৃঙ্গ’ জয়ী সত্যরূপ সিদ্ধান্ত। দক্ষিণ আমেরিকার চিলে-আর্জেন্টিনা সীমান্ত লাগোয়া ‘ওজোস ডেল সালাডো’ চিলের সর্বোচ্চ পর্বত তো বটেই, পশ্চিম ও দক্ষিণ গোলার্ধের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বতও। উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬,৮৯৩ মিটার অর্থাৎ ২২,৫১৫ ফুট।
সোমবার রাতে, ভারতীয় সময় ১০টা নাগাদ পর্বতশৃঙ্গে পৌঁছে যান মুর্শিদাবাদের ভূমিপুত্র সত্যরূপ। এই নিয়ে পরপর তিনটি সাফল্য পেলেন তিনি। প্রথম আন্টার্কটিকার ‘ভিনসন ম্যাসিফ’ জয়, তার পরে দক্ষিণ মেরু এবং সব শেষে পৃথিবীর সর্বোচ্চ জীবন্ত আগ্নেয়গিরি। তাঁর মা গায়ত্রী বলেন, ‘‘ওর সঙ্গে কথা হয়েছে। ভারী খোশমেজাজে রয়েছে।’’ সত্যরূপ বিরিয়ানি খেতে খুব ভালবাসেন। কলকাতা ছাড়া ইস্তক শহরের একটি নামী রেস্তোরাঁর বিরিয়ানি আর রসগোল্লার জন্য মনকেমন করছে বলে তিনি মাকে জানিয়েছেন।
বর্তমানে কলকাতার ঠাকুরপুকুরের বাসিন্দা সত্যরূপ অভিযানের জন্য বাড়ি থেকে রওনা দিয়েছিলেন গত ৩০ নভেম্বর। চিলে পৌঁছে তিনি যোগ দেন আরও চার অভিযাত্রীর সঙ্গে। ৭ ডিসেম্বর থেকে মূল অভিযান। ১৬ ডিসেম্বর অ্যান্টার্কটিকার ভিনসন ম্যাসিফ জয়। এর পর দীর্ঘ ১১১ কিলোমিটার স্কি করে বিপদসঙ্কুল রাস্তা অতিক্রম করে দক্ষিণ মেরু অভিযান করেন সত্যরূপ।
গত ১৬ ডিসেম্বর আন্টার্কটিকায় ৪,৮৯২ মিটার উঁচু ‘ভিনসেন ম্যাসিফ’ ছুঁতেই প্রথম অসামরিক বাঙালি হিসেবে ‘সপ্তশৃঙ্গ’ জয়ের কৃতিত্ব পান সত্যরূপ। ‘সপ্তশৃঙ্গ’ মানে সাতটি মহাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতের শৃঙ্গ— এশিয়ার এভারেস্ট, উত্তর আমেরিকার ডেনালি, দক্ষিণ আমেরিকার আকোঙ্কাগুয়া, আফ্রিকার কিলিমাঞ্জারো, ইউরোপের এলব্রুস, আন্টার্কটিকার ভিনসন ম্যাসিফ এবং অস্ট্রেলিয়ার কার্স্টেঞ্জ পিরামিড৷ ওশিয়ানিয়ার কসকিউস্কো ও ইউরোপের মঁ ব্লাঁ-কেও অবশ্য অনেকে এই মর্যাদা দেন৷
আগামী ২২ জানুয়ারি সত্যরূপের কলকাতায় ফেরার কথা। বহরমপুরে তাঁর ছেলেবেলার বন্ধুরা এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা বন্ধুবান্ধব বিরিয়ানি-রসগোল্লা নিয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে হাজির হবেন ভাবছেন।