ফাইল চিত্র
দীর্ঘ চার বছর পরে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জাতীয় র্যাঙ্কিংয়ে তবু মুখরক্ষা করল কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়। এই চার বছর তার প্রাপ্তি ছিল শুধুই লজ্জাজনক ভাবে পিছিয়ে পড়়া। ৪৫ নম্বর থেকে সে পৌঁছে গিয়েছিল ৯১ নম্বরে। এ বারে সেখান থেকে উৎকর্ষতার নিরিখে দু’ধাপ এগোতে পেরেছে সে। ৯১ থেকে এগিয়ে তার জায়গা হয়েছে ৮৯-এ।
অবশেষে পিছোনোর বদলে এগোতে পেরে কোনও রকমে সম্মানরক্ষা হলেও স্বস্তি পাচ্ছেন না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। স্বস্তি পাচ্ছেন না শিক্ষকেরাও। কারণ, পিছোনের গতির নিরিখে এগোনোর পরিমাণ নেহাতই অকিঞ্চিৎকর। তার উপর বিশ্ববিদ্যালয় পঠনপাঠনের অবনমন ও বেহাল পরিকাঠামো নিয়ে অভিযোগ ও সমালোচনার অন্ত নেই।
গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির জাতীয় র্যাঙ্কিং তালিকা (ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব র্যাঙ্কিং ফ্রেমওয়ার্ক) প্রকাশ করেছে। তাতে দেশের সেরা ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আইআইটি খড়্গপুর রয়েছে। একাদশ ও দ্বাদশ স্থানে রয়েছে যথাক্রমে কলকাতা ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।
কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় এই তালিকায় ২০১৬ তে ৪৫, ২০১৭ তে ৬৬, ২০১৮ তে ৮৬, ২০১৯ এ ৯১ নম্বরে নেমেছিল। এ বারে তার স্থান ৮৯-এ। এনআইআরএফ সামগ্রিক প্রতিষ্ঠানের ভিত্তিতেও একটি তালিকা প্রকাশ করে থাকে। সেখানে অবশ্য প্রথম ১০০তে কল্যাণীর স্থান হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক ও শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, আসলে তুলনাটা হওয়া দরকার ২০১৬ সাল থেকে। সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয় ওই তালিকায় প্রথম ৫০ এর মধ্যে ছিল। ক্রমশ তার পতন হয়। দু’ধাপ উপরে ওঠা মন্দের ভাল, কিন্তু কখনই স্বস্তির নয়। আরও অনেক পথ পার হওয়া বাকি।
কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবকুপা ইউনিটের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক নন্দকুমার ঘোষ ও অধ্যাপক সুজয় কুমার মণ্ডল জানান, এনআইআরএফ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিকাঠামো, গবেষণা, দুর্বল শ্রেণিভুক্ত পড়ুয়াদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা প্রভৃতি মানদণ্ডের নিরিখে তালিকা প্রকাশ করে। তাতে কল্যাণীর খুবই অবনতি হয়েছে। তাই এ বারের দু’ধাপ উপরে ওঠাকে সাফল্য বলা যায় না। এখন কী ভাবে ত্রুটি পূরণ করা যাবে সেটাই ভাবার বিষয়।
যদিও উপাচার্য শঙ্কর কুমার ঘোষ বলছেন, ‘‘এনআইআরএফ ২০১৬ সালে যখন প্রথম তালিকা প্রকাশ করে তখন বহু বিশ্ববিদ্যালয় আবেদনই করেনি। পরবর্তীতে দেশের প্রায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই এনআইআরএফের আওতায় আসছে। এই অবস্থায় হাজারেরও বেশি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রতিযোগিতায় কল্যাণীর ১০০-র মধ্যে থাকাটা কৃতিত্বের।’’ তিনি আরও দাবি করেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় উচ্চতর শিক্ষা অভিযানের ৭০ কোটি টাকা অনুদানের ভিত্তিতে গবেষণামূলক যে সব কাজ করছে তা এ বার এনআইআরএফ এর আবেদনে দেখানো যায়নি। পরের বার সে সব দেখালে তালিকায় প্রতিষ্ঠানের জায়গা অনেক ভাল হবে।