রহস্যজনক খুন প্রাথমিক শিক্ষক ও তার পরিবার। প্রতীকী চিত্র।
জিয়াগঞ্জের প্রাথমিক শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল সপরিবার খুনের মামলার অভিযুক্ত উৎপল বেহারাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন বিচারক। বৃহস্পতিবার বহরমপুরে তৃতীয় দ্রুত নিষ্পত্তি আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সন্তোষ কুমার পাঠক ফৌজদারি আইনের ৩১৩ ধারায় অভিযুক্ত উৎপল বেহারাকে সাক্ষীদের সাক্ষ্যর বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। ৪২ জন সাক্ষীর মধ্যে এই নিয়ে ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যর বিষয়ে বিচারক তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন। ফের আজ শুক্রবার এই মামলার শুনানি রয়েছে বলে আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে।
এ দিন অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী কৌশিক দে বলেন, ‘‘ফৌজদারি আইনের ৩১৩ ধারায় অভিযুক্তকে বিচারক জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। আজ বৃহস্পতিবারও অভিযুক্তকে বিচারকের জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা।’’ সরকার পক্ষের আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ফের শুক্রবার এই মামলার শুনানি আছে।’’
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে বিজয়া দশমীর দিন দুপুরে জিয়াগঞ্জের লেবুবাগানে নিজের বাড়িতে সপরিবার খুন হন প্রাথমিক শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল। সেদিনের ঘটনার খবর পেয়ে জিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের মৃতদেহ উদ্ধার করে। এ ছাড়া তাঁদের খুন করতে যে অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল সেটি উদ্ধার করে। একই সঙ্গে সেখান থেকে রক্তমাখা জীবনবিমার একটি পলিসি উদ্ধার করেছিলেন তদন্তকারীরা। ঘটনার কয়েকদিন পরে গ্রেফতার হয় অভিযুক্ত সাগরদিঘির সাহাপুরের বাসিন্দা উৎপল বেহারা। এই মামলার তদন্তকারী অফিসার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল জিয়াগঞ্জ থানার তৎকালীন ওসি বিশ্বজিৎ ঘোষালকে। এরই মাঝে বিশ্বজিৎ ঘোষালকে সরিয়ে এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় লালবাগের সিআই গোবিন্দ বিশ্বাসকে। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে উৎপল সদরঘাট দিয়ে পার হয়ে জিয়াগঞ্জে এসে সপরিবারে বন্ধুপ্রকাশকে খুন করেছিল। পরে জিয়াগঞ্জের নিমতলাঘাট পার হয়ে উৎপল জিয়াগঞ্জ থেকে পালিয়ে যায়।
এই মামলার দুই তদন্তকারী অফিসার-সহ মোট ৭৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছিল। ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বরে লালবাগ মহকুমা আদালতে এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। সরকার পক্ষের তরফে ৭৮ জনের মধ্যে ৪২ জনের এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে লালবাগ মহকুমা আদালতে। মৃত বন্ধুপ্রকাশ পালের মা বহরমপুরে জেলা জজের কাছে একটি আবেদন জানান। তারই পরিপ্রেক্ষিতে গত মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে মামলাটি লালবাগ মহকুমা আদালত থেকে জেলা আদালতে স্থানান্তরিত হয়। জেলা জজের নির্দেশে মামলাটি বর্তমানে বহরমপুরে তৃতীয় দ্রুত নিষ্পত্তি আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সন্তোষ কুমার পাঠকের এজলাসে শুনানি চলছে।