কল্যাণীতে পড়ুয়ারা সেলফি তুলছেন মাস্ক খুলে। নিজস্ব চিত্র।
দেড় বছরেরও বেশি সময় পর কলেজ খুলেছে। শিক্ষাঙ্গণ মুখরিত পড়ুয়াদের কলরবে। বহু মাস পর সহপাঠীদের সঙ্গে দেখা। তাই অনেক কলেজে দেখা গেল দূরত্ব-বিধি লঙ্ঘিত হতে। কোথাও বা বন্ধু-বান্ধবীদের জটলা। কোথাও দেখা গেল মাস্ক খুলে নিজস্বী নিতে।
বিভিন্ন কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার প্রথম দিনে উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। কৃষ্ণনগর উইমেন্স কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, বিজ্ঞানের বিভাগগুলিতে প্রায় একশো শতাংশ উপস্থিতি ছিল। ইংরেজি বিভাগে ৯০ এবং বাংলা বিভাগে ৭৫ শতাংশের কাছাকাছি উপস্থিতি ছিল। অধ্যক্ষ নাতাশা দাশগুপ্ত বলেন, “আমাদের অনুমান আজকে যারা অনুপস্থিত তারা হয়তো টিকা না-পাওয়ার কারণে কলেজে আসতে পারেনি। তবে অনেক দিন পর এ রকম একটা জীবন্ত ক্যম্পাস, আমরা সবাই খুব উপভোগ করেছি।” নবদ্বীপ বিদ্যাসাগর কলেজে উপস্থিতির গড় হার ছিল ষাট শতাংশ প্রায়। কলেজের বন্ধ গেটের বাইরে অনেক পড়ুয়াকে দেখা যায় ঘোরাফেরা করতে। অধ্যক্ষ স্বপনকুমার রায় বলেন “আমরা এক দিনে সকলকে ডাকিনি। বিভিন্ন সিমেস্টার ভাগ করে দিয়েছি। আজকে যাদের আসার কথা ছিল তাদের শতকরা ষাট জনের মতো উপস্থিত ছিল। সকলেই খুব চেয়েছিল কলেজটা খুলে যাক।” কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মানস সান্যাল বলেন, “মঙ্গলবার কোভিড বিধি মেনে পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। প্রথম দিনেই প্রায় ৮০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী উপস্থিত ছিল।”
অনেক কলেজেই বাংলা এবং ইতিহাসের বিষয়গুলিতে ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় কোথাও কোথাও ওই বিষয়ে সেকশন আলাদা আলাদা করেও পঠনপাঠন করার ব্যবস্থা হয়েছে। বগুলা শ্রীকৃষ্ণ কলেজে ও রানাঘাট কলেজে মঙ্গলবার তিনটি সেমিস্টারেরই পঠনপাঠন চলেছে বলে জানা গিয়েছে।
কল্যাণী মহাবিদ্যালয়ে এ দিন গিয়ে দেখা গেল ছাত্রছাত্রীদের অনেকে কলেজ প্রাঙ্গণে মাস্ক খুলে নিজস্বী তুলছেন। সেই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে এক কলেজ ছাত্র ভাস্কর বিশ্বাস বলেন, “আমরা শুধু সেলফি তোলার সময়ই মাস্ক খুলেছি। এখনই আবার পরে নেব।” মাস্ক ছাড়াই ঘুরতে দেখা গিয়েছে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অনেক ছাত্রছাত্রীকে। এ দিন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ করিমপুর পান্নাদেবী কলেজ এগিয়ে দেখা গেল, উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের অনেকের মুখে মাস্ক নেই। কলেজের গেটের দুই নিরাপত্তারক্ষী ভবেশ কুমার রায় ও প্রদ্যুৎ কুমার সাহা বলেন, “কলেজে মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দিইনি। ভেতরে গিয়ে খুলে ফেললে আমরা নিরুপায়।”
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুকদেব পাল বলেন, ‘‘এতবার সতর্ক করা সত্ত্বেও ছাত্রছাত্রীদের মুখে মাস্ক দেখতে না-পেয়ে খুব অবাক হলাম। প্রথম দিন সতর্ক করে ছেড়ে দিয়েছি। এমন চলতে থাকলে কড়া পদক্ষেপ করব।’’
মঙ্গলবার মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠন শুরু হলেও মোহনপুর বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বুধবার থেকে পঠনপাঠন শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে। এ দিন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলগুলিতে দূরদূরান্ত থেকে ছাত্রছাত্রীরা আসা শুরু করেছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।