(বাঁ দিকে) একনাথ শিন্ডে এবং দেবেন্দ্র ফডণবীস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
শিবসেনা (শিন্ডে) ‘বিহার মডেল’ মেনে একনাথ শিন্ডেকে মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি তুললেও কার্যত সেই সম্ভাবনা খারিজ করে দিল বিজেপি। বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র প্রেম শুক্ল বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিহারের মতো পরিস্থিতি মহারাষ্ট্রে নেই। নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “ভোটের আগেই নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করার প্রস্তাব দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু মহারাষ্ট্রে আমরা এমন কোনও কথা দিইনি। তা ছাড়া মহারাষ্ট্রে আমাদের সাংগঠনিক ক্ষমতাও বেশি।”
পুরোপুরি খোলসা না-করলেও বিজেপির ইঙ্গিত স্পষ্ট। মহারাষ্ট্রের শাসকজোট ‘মহাজুটি’র ‘বড়দা’ হিসাবে সরকারের রাশ নিজেদের হাতেই রাখতে চায় পদ্মশিবির। প্রসঙ্গত, সোমবার ‘বিহার মডেলের’ প্রসঙ্গ টেনে শিন্ডেসেনার মুখপাত্র নরেশ মাশকে বলেছিলেন, ‘‘বিহারে যেমন বিজেপি আসনসংখ্যার দিকে না-তাকিয়ে নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করেছিল, তেমনই মহারাষ্ট্রেও শিন্ডেকে মুখ্যমন্ত্রী করা উচিত।’’ অর্থাৎ, জোটের ছোট শরিক হলেও মুখ্যমন্ত্রিত্ব তাদেরই দেওয়ার দাবি তোলে শিন্ডের দল।
মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে দুই শরিকের এই টানাপড়েনের আবহেই হরেক জল্পনা তৈরি হচ্ছে। বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী পদে শিন্ডেকে দেখতে চেয়ে শিবসেনা কর্মী-সমর্থকদের চাপ বৃদ্ধির কৌশলকে ভাল ভাবে নিচ্ছেন না দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বর্ষাভবন (মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন)-এর সামনে সেনা সমর্থকদের ‘শক্তি প্রদর্শনের’ যে কৌশল নেওয়া হয়েছিল, তা বাতিল করা হয়েছে। সোমবার গভীর রাতেই সমর্থকদের সংযত থাকার বার্তা দিয়েছিলেন শিন্ডে। তার পরেও অবশ্য শিবসৈনিকেরা শিন্ডেকেই মুখ্যমন্ত্রী করার দাবিতে ক্রমশ সুর চড়াচ্ছেন। শিবসেনার এক নেতার দাবি, বিজেপি নাকি শিন্ডেকে জানিয়েছে যে, তিনিই মুখ্যমন্ত্রী থাকছেন।
মুম্বইয়ে কান পাতলে বিভিন্ন সূত্রে বিবিধ সম্ভাবনার কথা শোনা যাচ্ছে। যে সম্ভাবনাটির কথা বেশি শোনা যাচ্ছে, তা হল, দেবেন্দ্র ফডণবীসকে মুখ্যমন্ত্রী করে একনাথ শিন্ডেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করা হবে। তবে এই সূত্রে শিন্ডেসেনা রাজি হবে কি না, স্পষ্ট নয়। মঙ্গলবার সংবাদ সংস্থা পিটিআই একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানায়, বিজেপি পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়ে এগোতে চাইছে। সে ক্ষেত্রে প্রথমে সম্ভাব্য মন্ত্রিসভা গঠন করা হবে। শরিক দলগুলির মধ্যে দফতর বণ্টন করার পর পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী বেছে নেওয়া হবে।