TMC Internal Conflict

সাফল্যে কার হাত, তর্ক শুরু তৃণমূলে

লোকসভা নির্বাচনে ফল বেরনোর পরে হুমায়ুন কবীরের এমন বিতর্কিত মন্তব্যে অস্বস্তিতে দল।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২৪ ০৯:২৬
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

মুর্শিদাবাদ জেলায় বিরোধীদের শূন্য করে সব ক’টি আসনে জয়ী হয়েছে রাজ্যের শাসক দল। জেলার তিনটি লোকসভা আসনের সঙ্গে ভগবানগোলা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনেও জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। এত সাফল্যের পিছনে ‘কার ক্রেডিট’ তা নিয়ে তৃণমূলের কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে।

Advertisement

ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেছেন, ‘‘কলকাতায় আমাদের দলের জেলার চেয়ারম্যান রবিউল আলম চৌধুরী আমাকে বলেছিলেন ইউসুফ পাঠান নয়, অধীর চৌধুরী জিতবে।’’

তাঁর আরও দাবি, ‘‘গত লোকসভা নির্বাচনে ভরতপুর এবং বেলডাঙা ২ ব্লকে নির্বাচন পরিচালনার জন্য কমিটি গড়ে দেওয়ার জন্য দলের জেলা সভাপতিকে বলেছিলাম। তাঁকে আমি ভরতপুরের দলের লোকজনের নামের তালিকা যেমন দিয়েছিলাম, তেমনই যৌথ ভাবে আমি এবং রবিউল আলম চৌধুরী বেলডাঙা ২ ব্লকের কর্মীদের নামের তালিকা জেলা সভাপতিকে দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি এত ব্যস্ত ছিলেন যে কমিটি গড়ে দিলেন না। গত নির্বাচনে কে কী করেছে সে তথ্য আমার কাছে রয়েছে। সেটা দলের রাজ্য নেতৃত্বকে নির্দিষ্ট সময়ে জানাব।’’

Advertisement

যদিও হুমায়ুনের দাবি উড়িয়ে জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান রবিউল আলম চৌধুরী বলেন, ‘‘আমি এমন কথা হুমায়ুনকে বলিনি। ভোট করেছি বলেই রেজিনগর থেকে বেশি ভোট লিড দিতে পেরেছি। শক্তিপুরে হুমায়ুনের বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে বরং আমাদের লিড কম হয়েছে।’’

জেলা তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘ও সব ডেড চ্যাপ্টার। ক্রেডিট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁদের নির্দেশে বুথস্তর থেকে শুরু করে জেলা স্তর পর্যন্ত দলের সমস্ত নেতা কর্মী খেটেছেন, সকলের অবদান আছে।’’

অপূর্ব বলেন, ‘‘আর মুর্শিদাবাদের সাধারণ মানুষ আমাদের তিন জন প্রার্থীকে জিতিয়ে সাংসদ করেছেন। সে জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’’

লোকসভা নির্বাচনে ফল বেরনোর পরে হুমায়ুন কবীরের এমন বিতর্কিত মন্তব্যে অস্বস্তিতে দল। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকে তাঁকে কখনও বেসুরো হতে দেখা গিয়েছে, তার পরে আবার সুর নরম করে দলের হয়ে কাজ করেছেন।

গত লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুর কেন্দ্রে দলের প্রার্থী হিসেবে ইউসুফ পাঠানের নাম ঘোষণা হতেই বেসুরো হয়েছিলেন হুমায়ুন। পরে অবশ্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পরে সুর বদল করে ইউসুফের হয়ে জোরদার প্রচারে নেমেছিলেন হুমায়ুন।

লোকসভা নির্বাচনে ইউসুফ জয়ী হওয়ার পরে ফের বেসুরো হন হুমায়ুন। তিনি দলের জেলার সভাপতি থেকে শুরু করে দলের জেলার চেয়ারম্যান রবিউল আলম চৌধুরীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।

হুমায়ুন বলেছেন, ‘‘আমার প্রথম আসন রেজিনগর (বিধানসভা)। সে সময় (২০২১ সালে) দলের দায়িত্ব ছিলেন প্রশান্ত কিশোর। তিনি নিজে আমাকে ডেকে বলেছিল ৯০০ লোকের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে টেলিফোনে। সাড়ে সাতশো লোক নাকি রেজিনগরে আমাকে চেয়েছিলেন। সে সময় মুর্শিদাবাদের সাংসদ আবু তাহের খান জেলা সভাপতি ছিলেন শেষ মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রী আমাকে ভরতপুরে পাঠিয়েছিলেন। আমি নেত্রীর নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে সেখানে গিয়েছিলাম। সেখানে তৃণমূলের সংগঠনের যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন তাঁরা সবাই আমাকে হারানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছিলেন। কিন্তু মানুষ আমার সহায় থাকে। কান্দি মহকুমা চার জন তৃণমূলের বিধায়কের মধ্যে সর্বোচ্চ মার্জিনে (৪৩ হাজার ৩৮৩ ভোটে) আমি জিতেছিলাম। তখন দলের ভিতর থেকে এবং প্রশাসনের ভিতর থেকে আমাকে হারানোর চেষ্টা হয়েছিল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement