অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচন আসন্ন। দলনেত্রী সদ্য জেলায় এসে বার্তা দিয়ে গিয়েছেন, দলের সকলকে একসঙ্গে চলতে হবে। বিশেষ করে রানাঘাটে, যেখানে গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির কাছে নাকানিচোবানি খেয়েছে তৃণমূল, সেখানে যে একযোগে মাঠে নামা ছাড়া গতি নেই তা সহজবোধ্য। অথচ নেত্রী ফিরে যেতেই ফের অনৈক্যের ছবি উঠে এল রানাঘাট ১ ব্লক তৃণমূলে ভিতরে।
আগামী ডিসেম্বরে রানঘাটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা করার কথা। তার প্রস্তুতির জন্য রানাঘাট রামনগরে একটি প্রেক্ষাগৃহে সভা ডাকে ব্লক তৃণমূল। সেই সভায় দলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি তাপস ঘোষের ঘনিষ্ঠ কেউ কেউ অনুপস্থিত ছিলেন বলে দলীয় সূত্রের দাবি। তা নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
যদিও এমন ঘটনা এই প্রথম বার ঘটল, তা নয়। গত অগস্টে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি পদ থেকে তাপস ঘোষকে সরিয়ে দেয় দল। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব পান বারাসত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শেফালী বিশ্বাস। দুই শিবিরের বিভাজন ছিল আগেই। কিন্তু এই সাংগঠনিক রদবদলের পর তাপস ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে বিরোধী শিবিরের দূরত্ব সামনে এসেছে নানা সময়ে। সদ্য নিযুক্ত ব্লক সভাপতির ডাকা বৈঠকে তাপস-ঘনিষ্ঠদের গরহাজির থাকার ঘটনা সামনে এসেছে আগেও। শুধু তা-ই নয়, প্রকাশ্যেই ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে মুখও খুলেছেন তাঁরা।
তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, গত শনিবার ওই প্রস্তুতি বৈঠকে ব্লকের অধীনে থাকা বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধি, বুথ সভাপতি, অঞ্চল সভাপতিদের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। অথচ তারাপুর, কালীনারায়ণপুর, পাহাড়পুর, হবিবপুর পঞ্চায়েতের প্রধান আসেননি। দেখা যায়নি তারাপুর ও আনুলিয়ার অঞ্চল সভাপতিকেও। বৈঠকে তাঁর যোগ না দেওয়া প্রসঙ্গে তারাপুর অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি তাপস বিশ্বাসের দাবি, “দলের বর্তমান ব্লক সভাপতি অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছেন। এতে দলের মধ্যে বিভাজন তৈরি হচ্ছে। তাই ওই বৈঠকে যাইনি।” প্রাক্তন ব্লক সভাপতি তথা রানাঘাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তাপস ঘোষ অবশ্য দাবি করছেন, “আমাদের এখানে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। সকলেই দলের জন্য কাজ করছি।” আর বর্তমান ব্লক সভাপতি শেফালী বিশ্বাসের দাবি, “ওই সভায় সকলেই উপস্থিত ছিলেন। কে বা কারা এ ধরনের অভিযোগ আনছে, তা আমার জানা নেই।”