প্রতীকী ছবি।
আগের দিনই কর্মিসভায় তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা শঙ্কর সিংহ শান্তিপুরের প্রসঙ্গ তুলে বলেছিলেন, “অজয় ২৫ বছর পুরপ্রধান, ২৫ বছর বিধায়ক ছিল। একটা নির্বাচনে হেরে যাওয়াতে তাঁর কোনও গুরুত্ব নেই, কোনও মূল্য নেই বলে ধরে নেওয়া হবে কেন?”
আর, শনিবার শান্তিপুরে পাবলিক লাইব্রেরি হলে শান্তিপুর বিধানসভা এলাকার কর্মিসভায় এলেনই না দীর্ঘদিনের সেই নেতা, শান্তিপুরের পুর প্রশাসক অজয় দে। এর আগে কৃষ্ণলনগরে দলের বিজয়া সম্মিলনীতেও তিনি যাননি। এ দিন তিনি ছাড়াও গরহাজির থাকলেন একাধিক প্রাক্তন কাউন্সিলর। তবে অজয়-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত প্রাক্তন উপপুরপ্রধান আব্দুস সালাম কারিগর উপস্থিত ছিলেন।
দলের সদ্যগঠিত জেলা এবং ব্লক কমিটিতে গৌরীশঙ্কর দত্ত, কল্লোল খাঁ, শঙ্কর সিংহ, অজয় দে-র মতো বর্ষীয়ান নেতাদের কার্যত সাইডলাইনে পাঠানো হয়েছে। জেলা কমিটিতে ‘আমন্ত্রিত সদস্য’ হিসাবে ঠাঁই হয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী রত্না ঘোষ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুণ্ডু এবং নবদ্বীপের বিধায়ক পুণ্ডরীকাক্ষ ওরফে নন্দ সাহার। ইতিমধ্যে কল্লোল খাঁ এবং শঙ্কর সিংহ প্রকাশ্যে তাঁদের ক্ষোভের কথা জানিয়েও দিয়েছেন।
অজয় দে- র ডানা ছেঁটে শান্তিপুর শহরে দলের রাশ তুলে দেওয়া হয়েছে তাঁর ঘোর বিরোধী বলে পরিচিত অরিন্দম ভট্টাচার্যের হাতে, সিপিএম-কংগ্রেস জোটপ্রার্থী হিসেবে অজয়কে হারিয়ে যিনি বিধায়ক হয়েছিলেন এবং পরে দল বদলে তৃণমূলে চলে আসেন। শহরে দলের এবং যুব সংগঠনের সভাপতি এর আগে ছিলেন অজয়-ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন উপপুরপ্রধান আব্দুস সালাম কারিগর এবং জয়ন্ত ঘোষ। দুই পদ থেকেই সরানো হয়েছে তাঁদের। নতুন সভাপতি প্রেমাংশু নন্দী এবং অরবিন্দ মৈত্র অরিন্দমের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। সালামকে জেলার সহ-সভাপতি এবং তপনকে জেলার সাধারণ সম্পাদক পদে আনা হয়েছে। অজয় এবং শঙ্করকে জেলায় দলের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য করে কার্যত ক্ষমতাহীন করে দেওয়া হয়েছে।
জেলা কমিটির ‘আমন্ত্রিত সদস্য’ হলেও নন্দ সাহা অবশ্য কৃষ্ণনগরে বিজয়া সম্মিলনীতে গিয়েছিলেন। এ দিন নবদ্বীপের কর্মিসভাতেও তিনি হাজিরা দেন। বর্ষীয়ান সহযোদ্ধাদের ক্ষোভের প্রসঙ্গে না গিয়ে তিনি শুধু বলেন, “এই কমিটি দলনেত্রীর নির্দেশে গড়া হয়েছে। সুতরাং মেনে না নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। বরং সবাইকে নিয়ে কমিটি গড়ায় পরিধি বর্ধিত হল। অনেকে মিলে কাজ করা যাবে।”
কর্মিসভায় তাঁর অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে অজয় দে শুধু বলেন, “কেন যেতে পারিনি সে বিষয়ে যা জানানোর তা জেলা সভাপতিকে জানিয়েছি।”