(বাঁ দিকে) হাওড়ার বাজারে এল বাংলাদেশের ইলিশ। বাংলাদেশের উদ্দেশে আলুভর্তি ট্রাক (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
বুধে যে দাম ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা প্রতি কেজি। শুক্রবারে তা কমে হল কেজি প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। দু’দিনের মধ্যে বাংলাদেশের বাজারে নিম্নমুখী হল আলুর দাম। সৌজন্যে আবার ভারত। ডিম রফতানির পর মুহাম্মদ ইউনূসের দেশে রফতানি হল আলু। অন্য দিকে, দীর্ঘ টানাপড়েনের পরে বাংলাদেশ থেকে টন টন পদ্মার ইলিশ ঢুকেছে পশ্চিমবঙ্গে। জানা যাচ্ছে, শুধু হাওড়ার পাইকারি মাছ বাজারে এসেছে ১০ মেট্রিক টন ইলিশ। আর রাজ্যে প্রায় চল্লিশ মেট্রিক টন মাছ ঢুকেছে বাংলাদেশ থেকে।
বাংলাদেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এখন অগ্নিমূল্য। কিছু দিন আগে ভারত থেকে আমদানির কথা জানিয়েছিল অন্তর্বর্তিকালীন সরকার। বৃহস্পতিবার ভারত থেকে মোট পাঁচটি ট্রাকে ১০৮ মেট্রিক টন আলু ঢুকেছে বাংলাদেশে। শুক্রবারই পাইকারি বাজারে আলুর দাম কেজিতে প্রায় ২০ টাকা কমে গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন সে দেশের সব্জি ব্যবসায়ীরা। আলুর দাম কমায় স্বাভাবিক ভাবে খুশি আমজনতা। বস্তুত, বাংলাদেশে হাসিনা সরকার পতনের প্রায় দু’মাস পর ভারত থেকে এই প্রথম বার আলু রফতানি হল। বাংলাদেশ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৮ জুলাই ভারত থেকে শেষ বার আলু আমদানি করেছিল তারা।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম শহিদ আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘এখন টন প্রতি ১৮০ মার্কিন ডলারে আলু রফতানি করা হচ্ছে। যা কেজিতে ২১ টাকার কিছু বেশি পড়ছে। আমদানিকৃত আলু বিক্রির সময় যাতে অসাধু মধ্যস্বত্বভোগীর নিয়ন্ত্রণ না থাকে, সে ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ভারতীয় আলুর খুচরো মূল্য কেজি প্রতি পড়ছে বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩০ টাকা। দাম নির্দিষ্ট করেছে সে দেশের উপভোক্তা বিষয়ক দফতর।’’ জানা যাচ্ছে আমদানি শুল্কে ছাড় দেওয়াতেই ভারত থেকে আলু আমদানির সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ওই আলু পৌঁছেছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশের আমদানিকারক সংস্থার প্রতিনিধি নাসিরউদ্দিন জানিয়েছেন, তাঁদের দেশের বাজারে আলুর দাম এই মুহূর্তে স্বাভাবিকের থেকে অনেক বেশি। তিনি বলেন, ‘‘আলু যে হেতু নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মধ্যে পড়ে, সে জন্য তার দাম নিয়ন্ত্রণে রাখাটা জরুরি। শুক্রবার ক্রেতাদের অনেকটা নাগালে এসেছে আলু।’’ শিলিগুড়ির আলু রফতানিকারক সংস্থার প্রতিনিধি গৌরগোপাল সাহা বলেন, ‘‘বর্তমানে রাজ্যে যে পরিমাণ আলু মজুত আছে, তা দিয়ে আগামী মরসুম পর্যন্ত আমাদের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা সম্ভব। বাংলাদেশ চাইলে তাদের ‘ক্রাইসিসে’ আলু রফতানি করা যেতেই পারে।’’