পাড় ভাঙছে গঙ্গা। চলছে গঙ্গাপুজো (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র
গঙ্গায় ধীরে ধীরে তলিয়ে যাচ্ছে আস্ত একটা গ্রাম। জমি জায়গা গ্রাস করে এখন বাড়ির দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে নদী। আতঙ্ক আর উৎকন্ঠার মধ্য দিনযাপন নদীর কোল ঘেঁষা গ্রামের মানুষের। ভাঙনের ভয়ে রাতের ঘুম উধাও শমসেরগঞ্জের শিবপুর, ধানঘড়া, লোহারপুরের মানুষের।
তাঁদের অভিযোগ, নদী ক্রমশ এগিয়ে এলেও সেচ দফতরের তেমন হেলদোল নেই। তাই গঙ্গা পুজো শুরু করেছেন ওই সব গ্রামের ভিটেহারা মানুষজন। গত দু’দিন ধরে, গঙ্গার কোলে সেই পুজোয় ভিড় ভেঙেছে গ্রামের মহিলাদেরও। করজোড়ে তাঁদের প্রার্থনা ‘আর ভেঙো না মা, ঘরটুকু রক্ষা কর!’
গত কয়েক দিন ধরে শমসেরগঞ্জের চাচন্ড, প্রতাপগঞ্জ ও নিমতিতা গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটা গ্রামে গঙ্গার ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনের জেরে ইতিমধ্যেই তলিয়ে গিয়েছে প্রায় ৯০ বিঘা জমি। আর মাত্র ৫০০ মিটার ভাঙলেই গ্রাস করবে বাড়িঘর। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সেচ দফতরের ঘুম ভাঙেনি, তাই তড়িঘড়ি মা গঙ্গার পুজো করছেন তাঁরা।
গ্রামের মোড়ল ধনপতি মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের চাষের জমি গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে। এ বার বাড়ি গ্রাস করবে নদী। সরকারের কানে আমাদের কথা যায় না। বেশ কিছু দিন হল ভাঙন আরম্ভ হয়েছে। আজ পর্যন্ত কেউ
এল না।’’
স্থানীয় চাচন্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের সায়রা বিবিও আঙুল তুলেছেন প্রশাসন ও সেচ দফতরের কর্তাদের দিকে। বলছেন, ‘‘মানুষ পুজো করবে না তো কী করবে! নদী ভাঙছে। এত বার জানানো সত্ত্বেও সেচ দফতরের কর্তারা তো শীতঘুমে, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এলাকায় আসার সময়ই হয়নি তাঁদের।’’
সেচ দফতররের সহকারী ইঞ্জনিয়ার (বহরমপুর ডিভিশন) কল্পরূপ পাল বলেন, ‘‘ভাঙন আরম্ভ হয়েছে। গঙ্গার জল নীচে না নামলে ভাঙন প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। তবু, প্রাথমিক ভাবে ঠেকা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। তবে, শীতের সময় গঙ্গা ভাঙনের আসল কাজ আরম্ভ হবে।’’