উর্দি পরেই রক্তদান পুলিশ আধিকারিকের। — নিজস্ব চিত্র।
প্রসববেদনা উঠেছিল তরুণীর। শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা একেবারেই কমে গিয়েছিল। ফলে জরুরি ভিত্তিতে ওই মহিলার রক্তের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। কিন্তু হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে তাঁর গ্রুপের রক্ত না থাকায় বিপাকে পড়েন পরিজনেরা। রক্তের অভাবে আটকে ছিল মহিলার প্রসবকালীন অস্ত্রোপচার। বিষয়টি জানতে পেরে তৎপর হন স্থানীয় কান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক মৃণাল সিংহ। কর্তব্যরত অবস্থায় পুলিশের উর্দিতে হাসপাতালে গিয়ে ওই প্রসূতিকে রক্ত দিলেন থানার আইসি। মুর্শিদাবাদের বড়ঞার ঘটনা।
বড়ঞা থানার দেবগ্রামের বনদিনী ফুলমালি। তাঁর শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গিয়েছিল। শীঘ্র ‘ও পজিটিভ’ গ্রুপের রক্তের দরকার পড়ে। হাসপাতাল থেকে রক্তের জন্য বলা হয় পরিবারকে। এদিকে কোথাও রক্ত পাওয়া যাচ্ছিল না। ফুলমালির রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা নেমে যায় ৫.১-এ। বিষয়টি জানতে পারেন কান্দি থানার আইসি। তিনি এগিয়ে আসেন। প্রসূতির আত্মীয়েরা কৃতজ্ঞতা জানান পুলিশ আধিকারিককে। এক পরিজন বলেন, ‘‘পুলিশকে দেখলেই আমরা ভয়ে থাকি। কিন্তু পুলিশের মধ্যে যে একটা মানবিক রূপ বেঁচে রয়েছে, আজ চাক্ষুষ করলাম। উনি দেবদূতের মতো হাজির হয়ে মা ও গর্ভস্থ শিশুর প্রাণ বাঁচালেন।’’ থানার আইসি মৃণাল বলেন, ‘‘ডিউটি করছিলাম। হঠাৎ খবর পেলাম এক জন প্রসূতির আমার গ্রুপের রক্তের প্রয়োজন। তাই ব্যস্ত থাকলেও ছুটে এসেছি।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হওয়ার পর রাজনৈতিক সংগঠনগুলির রক্তদান শিবির কার্যত বন্ধ। প্রচন্ড গরমের কারণে অনেকেই রক্ত দিতে ইচ্ছুক নন। বিভিন্ন প্রশাসনিক জটিলতায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিও রক্তদান আয়োজনের অনুমতি পাচ্ছে না। ফলে জেলা জুড়ে রক্তের সঙ্কট তৈরি হয়েছে।