Aadhaar card

আধারের জন্য হিম রাতে ডাকঘরে কম্বলে মোড়া লাইন

ডাকঘরের হাতে মাত্র ৭০০ ফর্ম থাকায়  বিকেল পর্যন্ত লাইনে দাঁড়ানো সকলকে ফর্ম দিতে পারল না ডাক বিভাগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ধুলিয়ান শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২০ ০১:৩০
Share:

রাত জেগে আধারের লাইনে। ছবি: জীবন সরকার

রাতভর লাইন দিয়েও আধার কার্ড সংশোধনের তারিখ না পেয়ে ফিরে গেলেন প্রায় হাজার দেড়েক মানুষ। ধুলিয়ান ডাকঘরে আধার কার্ড সংশোধনের ফর্ম পেতে বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকেই লাইন পড়েছিল কয়েকশো মানুষের। শুক্রবার সেই লাইন এঁকেবেঁকে এগোতে থাকে পটেল মোড় পর্যন্ত। লাইনে তখন প্রায় আড়াই হাজার মানুষ। কিন্তু ডাকঘরের হাতে মাত্র ৭০০ ফর্ম থাকায় বিকেল পর্যন্ত লাইনে দাঁড়ানো সকলকে ফর্ম দিতে পারল না ডাক বিভাগ। ফর্ম না পেয়ে ঘুরে যাচ্ছেন মানুষ, এই খবরে ঘটনাস্থলে এসে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য মহম্মদ আজাদ আলি। তবে ডাক বিভাগ এ দিন আশ্বাস দিয়েছেন, দু’মাসের মধ্যেই ফের ফর্ম দেওয়া হবে।

Advertisement

বিভিন্ন ডাকঘরে ফর্ম দেওয়া নিয়ে ব্যাপক অশান্তির কারণেই এ দিন আগে থেকেই ঘোষণা করা হয়েছিল, সকলকেই ফর্ম দেওয়া হবে একটি করে। সেই কারণেই ডাকঘরের সামনে আগের দিন রাত থেকে জমতে থাকে ভিড়। এনআরসি’র আতঙ্কে নাওয়াখাওয়া ভুলে আধার কার্ডের জন্য শীতের রাতেও লাইন দিয়ে পড়ে থেকেছেন তাঁরা। সোয়েটার, চাদরের সঙ্গে অনেকেই এনেছেন কম্বল। রয়েছেন মহিলারাও। বলছেন, ‘‘ভিটে বাঁচাতে হবে তো!’’ ডাকঘর খুলতেই হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। লাইনে দাঁড়ানো বছর ৪৫ বয়সের এক মহিলা মিলি বিবি মাটিতে পড়ে যান ধাক্কাধাক্কিতে। তাঁকে অনুপনগর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এ দিন অবশ্য আর ফর্ম নিতে পারেননি তিনি। প্রথম দিকে পুলিশ না থাকলেও ফর্ম দেওয়া শুরু হলেই ডাকঘরে আসে পুলিশ। এ দিন ধুলিয়ান ডাকঘরে আধার কার্ড সংশোধনের জন্য শুধু শমসেরগঞ্জের মানুষেরাই নন, ফরাক্কা, ঝাড়খণ্ডের পাকুড়, মালদহের বৈষ্ণবনগরের গ্রামগুলি থেকেও ভিড় করেছিলেন অনেকে। ঝাড়খণ্ড সীমান্ত লাগোয়া অদ্বৈতনগরের রুকসানা খাতুন রাত সাড়ে ৮টায় বাড়ি থেকে কাঁথা-বালিশ নিয়ে ধুলিয়ান ডাকঘরের সামনে যখন আসেন তখন সেখানে শ’তিনেক লোক। তিনি বলেন, “স্বামী বাইরে, শ্বশুর-শাশুড়ির বয়স হয়েছে। তাই আমাকেই রাতের আঁধারে লাইনে বসতে হয়েছে।”

ডাক-অপেক্ষা

Advertisement

অপেক্ষায় ছিল অন্তত আড়াই হাজার মানুষ ফর্ম ছিল মাত্র ৭০০ শমসেরগঞ্জ ব্লক ও পুরসভা এলাকায় একটি মাত্র আধার কেন্দ্র ধুলিয়ান ডাকঘর প্রতিদিন ২০ জনের আধার কার্ডের কাজ করা যায় এখানে

৭০০ ফর্ম পাওয়া গিয়েছিল, তা-ও সবাইকে তা দেওয়া যায়নি। (ধুলিয়ানের ডাক আধিকারিক)

পারলালপুরের সন্তোষ মণ্ডল বলছেন, “আমরা মালদহ জেলার লোক। আমাদের অফিসের কাজকর্ম মালদহের কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকে গিয়ে করতে হয়। কিন্তু মুর্শিদাবাদ হলেও গঙ্গা পেরিয়ে ধুলিয়ানে আসা আমাদের সহজ। তাই এসেছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement