আজ, মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক। তার আগে পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রস্তুতি। সোমবার, কৃষ্ণনগরের এক স্কুলে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
আজ থেকে শুরু হওয়া উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্য জুড়ে বেশ কিছু পরীক্ষা কেন্দ্রকে স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, যে ভাবে স্পর্শকাতর ভোট গ্রহণের বুথকে নিয়ে আলাদা ভাবে সতর্কতা নেওয়া হয়, অনেকটা সেই ভাবেই স্পর্শকাতর হিসাবে চিহ্নিত পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্র ঘিরে সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে।
প্রধানত, যে সব কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়ার সময় বিগত বছরগুলিতে অশান্তির ঘটনা ঘটেছে, প্রধানত সেই সব পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্র এ বার স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। সে জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। নদিয়া জেলায় এমন পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা ১৩টি। আর মধ্যে রয়েছে রানাঘাট মহকুমার চারটি স্কুল, কৃষ্ণনগর সদর মহকুমার ছয়টি স্কুল এবং তেহট্ট মহুকুমার তিনটি স্কুল।
কীসের ভিত্তিতে স্পর্শকাতর পরীক্ষা কেন্দ্রগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে?
এই প্রশ্নের জবাবে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নদিয়া জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক রমেন ঘোষ বলেন, “যে সব স্কুলে অতীতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সময়ে গোলমাল হয়েছে বা বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে কেন্দ্রগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে।”
স্বাভাবিক ভাবেই স্পর্শকাতর পরীক্ষা কেন্দ্রগুলি নজিরবিহীন নিরাপত্তা বেষ্টনীতে মুড়ে ফেলা হয়েছে। থাকছে মেটাল ডিটেক্টর, সিসিটিভি ক্যামেরা। রমেন ঘোষ আরও জানিয়েছেন এ ছাড়াও থাকছে ‘রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি টেস্ট ডিভাইস।’ যার মাধ্যমে যদি কেউ কোনও ভাবে মেটাল ডিটেক্টরকে ফাঁকি দিয়ে মোবাইল নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকে পড়ে, তা হলে ওই যন্ত্রে ধরা পড়ে যাবে। একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে মোবাইল ফোন থাকলেই যন্ত্রে সিগন্যাল দেবে। সমস্ত পরীক্ষা কেন্দ্রেই মোবাইল ফোন ব্যবহার কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ।
প্রসঙ্গত, চূড়ান্ত সতর্কতা সত্ত্বেও এবারে মাধ্যমিক পরীক্ষায় ইংরেজি প্রশ্নপত্র পরীক্ষা চলাকালীনই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যা নিয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে অস্বস্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে।
তাই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। ইতিমধ্যে বিজ্ঞপ্তি জারি করে তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, কী করা যাবে এবং কী করা যাবে না—
১) পরীক্ষা কেন্দ্রে কোনও শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না।
২) পরীক্ষার্থীরা যাতে অসদুপায় অবলম্বন না করতে পারে, সে দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। অন্যথায় সরকার ব্যবস্থা নেবে।
৩) যে কক্ষে যে বিষয়ের পরীক্ষা হবে, সেই কক্ষে সেই বিষয়ের কোনও শিক্ষক নজরদারির দায়িত্বে থাকতে পারবেন না।
৪) ভেনু সুপারভাইজারের ঘরটি ‘কনফিডেন্সিয়াল রুম’ হিসাবে চিহ্নিত হবে। সেখানে অন্যদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।
৫) স্পর্শকাতর হিসাবে চিহ্নিত পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রবেশ পথে মেটাল ডিক্টেটরের মাধ্যমে মোবাইল ফোন এবং অন্য সরঞ্জাম পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে।
নদিয়ায় স্পর্শকাতর ১৩ পরীক্ষা কেন্দ্র
১) বগুলা হাইস্কুল (৫৩৩ পরীক্ষার্থী)
২) তাহেরপুর নেতাজি হাইস্কুল (৪৭১ জন পরীক্ষার্থী)
৩) ধানতলা হাইস্কুল (২২৫ পরীক্ষার্থী)
৪) হুমনিয়াপোতা আবদুল আজিজ হাইস্কুল (৫৫৮ জন পরীক্ষার্থী)
৫) হুদা বিদ্যাপীঠ (৩৬৮ জন পরীক্ষার্থী)
৬) কামারি হাইস্কুল (৪৬৬ জন পরীক্ষার্থী)
৭) ইষ্ট চাপড়া কিং এডওয়ার্ড হাইস্কুল (৩৩১ জন পরীক্ষার্থী)
৮) দেবগ্রাম এসএ বিদ্যাপীঠ (৫২৯ জন পরীক্ষার্থী)
৯) নাগাদিয়া ওবাইদিয়া হাইস্কুল (৩৪৭ জন পরীক্ষার্থী)
১০) চন্দননগর আরডিপি ইনস্টিটিউট (৫৫৫ জন পরীক্ষার্থী)
১১) বেতাই হাইস্কুল (৫৪০ জন পরীক্ষার্থী)
১২) শিকারপুর হাইস্কুল (৪০১ জন পরীক্ষার্থী)
১৩) হোগলবেরিয়া আদর্শ শিক্ষা নিকেতন (২৮৬ জন পরীক্ষার্থী)
উচ্চ-মাধ্যমিক: ২০২৩
মোট পরীক্ষার্থী – ৫২৮৪৫
ছাত্র – ২৪৫৮৩
ছাত্রী – ২৮২৬২
পরীক্ষা কেন্দ্র – ১৫৩টি
মেন ভেনু – ৩৭টি
সাব ভেনু – ১১৬ টি
উচ্চ-মাধ্যমিক: ২০২২
মোট পরীক্ষার্থী – ৮৮৫৭৪
মোট পরীক্ষা কেন্দ্র – ৩৭৮টি