জঙ্গিপুর মুনিরিয়া হাই মাদ্রাসার হস্টেল।— নিজস্ব চিত্র
নির্মাণ শেষ হয়েছে বছর দুয়েক আগে। কিন্তু আজও সংখ্যালঘু ছাত্রীদের জন্য বানানো দু’টি হস্টেল চালু হল না।
জঙ্গিপুর হাই স্কুলের ছাত্রী আবাসনটি পড়ে রয়েছে দু’বছর ধরে। পাশেই জঙ্গিপুর মুনিরিয়া হাই মাদ্রাসার ছাত্রী আবাসনটি সম্পূর্ণ হয়েছে এক বছর আগে। দু’টি স্কুলেই ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা সাড়ে ৪ হাজার।
৬০ লক্ষ টাকা খরচ করে তৈরি জঙ্গিপুর হাই স্কুলের আবাসনে ৬০ জন এবং ৭৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বানানো মাদ্রাসার আবাসনে ৪৮ জন সংখ্যালঘু ছাত্রী থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। তাদের জন্য রান্না ঘর, নিরাপত্তা কর্মী সব কিছুর অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ছাত্রীদের জন্য মাথা পিছু মাসে ১০০০ টাকা করে খরচও বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু এত কিছুর পরেও চালু হল না ওই দুই হস্টেল। তৃণমূলের মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি শেখ ফুরকানের অভিযোগ, “স্কুলের নির্লিপ্ততার কারণেই ওই আবাসন দু’টি চালু করা যায়নি।”
কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক বরাদ্দে আবাসন দু’টি তৈরি করেছে জঙ্গিপুর পুরসভা। পুরপ্রধান মোজাহারুল ইসলাম বলছেন, “পুরসভা দুটি আবাসন নির্মাণের পরই তা স্কুল কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করে। কিন্তু এখনও সেটি চালু না হওয়ার দায় স্কুল কর্তৃপক্ষের।”
জঙ্গিপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ফারহাদ আলি বলেন, “স্কুলের পড়ুয়ারা সকলেই এই এলাকারই বাসিন্দা। তাই বহু চেষ্টা করেও বাড়ি ছেড়ে এসে তাদের আবাসনে থাকতে রাজি করানো যায়নি।”
তিনি জানান, তাই দু’বছর থেকে সেটি পড়ে আছে। গত সপ্তাহে ভবনটি দেখেও গেছেন সংখ্যালঘু দফতরের এক কর্তা। এই ভবনটি অন্য কোনও কাজে ব্যবহারের জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছে।
জঙ্গিপুর মুনিরিয়া হাই মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহজাহান বলছেন, “একটু বৃষ্টিতেই আবাসনটি জলে ডুবে যায়। বর্ষায় গোটা চত্বরই ডুবে থাকে জলে। ফলে আবাসনে ছাত্রীদের রাখার ঝুঁকি নেওয়া যাচ্ছে না। তাই সেটি চালু করা যায়নি।’’
সংখ্যালঘু দফতরের জেলা আধিকারিক সৌমেন দত্ত বলেন, “ছাত্রী আবাসের জন্য দু’টি স্কুলই আবেদন করেছিল। এখন কেউ বলছেন, থাকার জন্য ছাত্রী মিলছে না। কেউ বলছেন, জল জমার সমস্যার কথা। তাহলে তারা আবেদন করেছিলেন কেন? এমনটা চললে জঙ্গিপুর স্কুলের আবাসনে কলেজের বহিরাগত সংখ্যালঘু ছাত্রীদের থাকার সুযোগ দেওয়া হবে। আর জল জমার সমস্যা কাটাতে ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজের জন্য বিডিওকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’