প্রতীকী ছবি।
এ বছর সরকারি বিধি মেনে ভিড়ে লাগাম টেনেছেন হোটেল মালিকরা। শহরের বারগুলিতেও ছিল বিধির বাঁধন। বহরমপুরের এক বার মালিক রানা ভট্টাচার্য্য বলেন, “চল্লিশ শতাংশেরও কম মানুষ এবার বারে এসেছেন।” বিদেশি মদের ব্যপক চাহিদা বহরমপুরে না থাকলেও দেশে তৈরি বিদেশী মদের অন্যবার চাহিদা থাকে তুঙ্গে। সব কিছুর মত ২০২০ ব্যতিক্রমী বছর মদ বিক্রিতেও। লকডাউন পরবর্তী সময়ে মদের দাম বৃদ্ধির ফলে বছর শুরু ও শেষের দিনেও মদের দোকান এড়িয়ে গেলেন ক্রেতারা। ফলে বছর শেষের দিনেও ব্যবসায় মন্দা কাটল না জানিয়ে স্যোশাইটি ফর দি ওয়েলফেয়ার অব ফরেন লিকার লাইসেন্সের জেলা সম্পাদক অনিমেষ চক্রবর্তী বলেন, “গত বছরের তুলনায় এই দুদিনে ৪০-৪৫ শতাংশ বিক্রি কমেছে মদের।” এর জন্য তিনি মদের দ্বিগুণ দাম বৃদ্ধিকেই দায়ী করেছেন। সে কথা মেনে নিয়েছেন দুই পুলিশ জেলার আবগারী দফতরের আধিকারিকরাও। এর ফাঁকে অবশ্য চোলাই মদের রমরমা বেড়েছে জেলা জুড়ে। বছরের শেষদিন দৌলতাবাদ থানার চাঁদপুরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রায় একশো লিটার চোলাই আটক করেছে। ভাঙা হয় চোলাই মদের ঠেকও।
করোনা আক্রান্ত বাজারে বিদেশি মদ তো দূর অস্ত্, দেশি মদ কেনার মত কড়িও নেই সুরাপায়ীদের একাংশের গাঁটে। ফলে রমরমা বেড়েছে চোলাইয়ের। শুধু চোলাই-ই নয় মফসসল এলাকায় খেজুর বা তাল রসের চাহিদাও বেড়েছে বেশ ভালোই। ফলে দুপুর গড়াতেই সুরাপায়ীরা ভিড় জমাচ্ছেন গোপন আসরে। রাত পর্যন্ত চলছে সস্তার চোলাই আর তাড়ির কারবার। হরিহরপাড়া, ডোমকল, লালবাগ কিম্বা নবগ্রাম জেলার আনাচকানাচে এ এখন চেনা ছবি। এক সুরাপায়ীর কথায়, ‘‘করোনার সময় রোজগার কমেছে। এক বোতল বাংলা কিনতে লাগছে ১২০ টাকা। অত টাকা পাব কোথায়? তাড়ি খেলে ২০ টাকাতেই হয়ে যাবে। আর নেশাও জমবে।’’ জানা গিয়েছে ৬০০ মিলি লিটারের এক বোতল দেশি মদের দাম ১০০টাকা (কাউন্টারে) হলেও খোলা বাজারে তা বিক্রি হয় ১২০-৩০ টাকা। ৩০০ মিলি বোতলের দাম তুলনামূলক ভাবে বেশি। এদিকে ২০-২৫ টাকা খরচ করলেই মিলছে একগ্লাস (৪০০মিলি)
চোলাই। সাথে আবার বিট নুন, ছোলা সেদ্ধ, কাঁচালঙ্কা ফ্রি! ফলে কম খরচে অনেকেই ছুটছেন গোপন ডেরায়। হরিহরপাড়ার নিশ্চিন্তপুর, চোঁয়া, দস্তুরপাড়া, শ্রীহরিপুর সহ একাধিক জায়গায় চলে চোলাইয়ের রমরমা।
আবগারি দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘চোলাইয়ের বিরুদ্ধে আমাদের লাগাতার অভিযান চলছে।’’ অতিরিক্ত জেলাশাসক(এল.আর) রজত নন্দ বলেন, ‘‘চোলাই মদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় আবগারি দফতর ও পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। পাশাপাশি এই সমস্ত বিষমদ থেকে দূরে থাকতে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার কাজও চলছে।’’