প্রতীকী ছবি।
করোনায় মৃত্যু হল এক স্বাস্থ্যকর্মীর। মঙ্গলবার সকালে বহরমপুরে মাতৃসদন করোনা হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। আর ওই স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। স্বাস্থ্য দফতরের সূত্রের খবর, খোদ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে তাঁকে গাফিলতির বিষয়টি জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি সুপারের কাছ থেকে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টও চেয়েছেন। গাফিলতির অভিযোগকে কেন্দ্র করে জেলার প্রশাসনিক মহলে হইচই শুরু হয়েছে। তবে সুপারকে দেওয়া চিঠি নিয়ে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কোনও মন্তব্য করতে চাননি। সুপার শর্মিলা মল্লিকেরও দাবি, তিনি মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছ থেকে এমন কোনও চিঠি পাননি।
সূত্রের খবর, জেলায় এই প্রথম করোনায় সরকারি কর্মীর মৃত্যু হল। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মেডিক্যাল কলেজের সুপারকে চিঠিতে জানিয়েছেন, সোমবার দুপুরে ওই স্বাস্থ্যকর্মী ভর্তি হন। ভর্তি হওয়ার সময়ে তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল ছিল। সন্ধ্যায় শ্বাসকষ্ট শুরু হলে সিসিইউতে পাঠানো হয়। পরে ভেন্টিলেশনেও দেওয়া হয়েছিল। বিভিন্ন জায়গা থেকে গাফিলতির বিষয়টি তাঁকে জানানো হয়েছে। হাসপাতাল সুপার শর্মিলা গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘গাফিলতির অভিযোগ ঠিক নয়। সঠিক ভাবে চিকিৎসা হয়েছে। আমরা আপ্রাণ তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি।’’ জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪৪ বছর বয়সি ওই স্বাস্থ্যকর্মী সালারের প্রসাদপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দ্বিতীয় এএনএম পদে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি প্রসাদপুর উত্তরপাড়ায়। মৃতার আত্মীয় রাজকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘কাকিমা নিজে হেঁটে গাড়িতে উঠেছেন। আর তিনি কিনা মারা গেলেন। আমাদের ধারণা চিকিৎসায় গাফিলতি রয়েছে।’’ তবে এ বিষয়ে পরিবারের তরফ থেকে এখনও লিখিত অভিযোগ হয়নি।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, সালারের প্রসাদপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দ্বিতীয় এএনএম ছিলেন ওই মহিলা। সপ্তাহ খানেক আগে মালিহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতে স্বাস্থ্য দফতরে একটি বৈঠকে তিনি যোগ দিয়েছিলেন। সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকা এক স্বাস্থ্যকর্মীর করোনা পজ়িটিভ হয়। পরবর্তী সময়ে প্রসাদপুরের এই এএনএম ও তাঁর পরিবারের অন্যদের লালারস সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য দফতর। তাতে দেখা যায় ওই দ্বিতীয় এএনএম ও তাঁর দুই মেয়ের করোনা পজ়িটিভ হয়েছে। সোমবার সকালে মা ও দুই মেয়েকে বহরমপুরে মাতৃসদনে আনা হয়। মাকে সিসিইউতে রাখা হয় এবং মেয়েদের সাধারণ ওয়ার্ডে রাখা হয়। মঙ্গলবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মৃতের ভাইপো আশিষ ঘোষ বলেন, “কী কারণে এমন হল বুঝতে পারছি না।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)