প্রতীকী ছবি।
এক পুলিশকর্মীর পরে শমসেরগঞ্জে এ বার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক তারিফ হোসেন। তার পরেই দাবি উঠতে শুরু করে, সারা শমসেরগঞ্জই লকডাউন করার। তার পরে রাতে ধুলিয়ানের পুরপ্রশাসক সুবল সাহা বলেন, ‘‘শমসেরগঞ্জ থানা ও ধুলিয়ান পুর এলাকায় করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করেছে। এলাকার মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে ১১ জুলাই থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত ৫দিন সমগ্র শমসেরগঞ্জ থানা ও শহর এলাকায় পুরোপুরি লকডাউন করা হয়েছে। এই সময় সমস্ত দোকান পাট, যানবাহন বন্ধ থাকবে। খোলা থাকবে শুধুমাত্র ওষুধের দোকান। সকাল ৭টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত আনাজের বাজার বসতে পারবে দূরত্ব বিধি মেনে। এলাকায় কেউ রাস্তায় বেরোলে মাস্ক পরে বেরোতেই হবে। শমসেরগঞ্জ থানা ও ধুলিয়ান পুর প্রশাসকের পক্ষ থেকে আজ যৌথ ভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
আক্রান্ত ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক তারিফ হোসেন অবশ্য বুধবার থেকেই আইসোলেসনে রয়েছেন পজ়িটিভ হওয়ায়। তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবারই ৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন শমসেরগঞ্জে। রাশিয়া থেকে ফেরা এক চিকিৎসক ছাত্রও ভাসাই পাইকরে পজ়িটিভ হয়েছেন। তাঁকেও বাড়িতেই আইসোলেসনে রাখা হয়েছে। ব্লকে সমস্ত হাসপাতাল কর্মী, নার্স ও চিকিতসকের লালারস পরীক্ষা হচ্ছে। সকলেই আতঙ্কে আছেন। প্রতিদিন গড়ে ২২টি করে প্রসব হয় এই হাসপাতালে। হাসপাতাল আক্রান্ত হলে সবচেয়ে সমস্যায় পড়বেন তাঁরা।”
মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকর্মীরা সরাসরি পরিষেবার যুক্ত। ফলে স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকিও বেশি রয়েছে। তবে স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। রোগীরা যাতে সুরক্ষা বিধি মেনে হাসপাতালে আসেন, সে বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে।’’
ইতিমধ্যেই ২২ জন আক্রান্ত হয়েছেন শমসেরগঞ্জে। কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হয়েছে রতনপুর ও ধুলিয়ান শহরের মধ্যে ৫ নম্বর ওয়ার্ডকে। কিন্তু ঘোষিত কন্টেনমেন্টের দুটি এলাকায়ই বৃহস্পতিবার সন্ধে পর্যন্ত খোলা মেলাই ছিল। মানুষজন ও যানবাহন চলছে। সন্ধে বাড়লে প্রশাসন অনেকটাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তৃণমূলের সুষমা সরকার বলছেন, “মাইকে ঘোষণা থেকে সব কিছু করা হয়েছে। কিন্তু ওয়ার্ডে যাতায়াত বন্ধ করা যায়নি। দশ শতাংশের মুখেও মাস্ক নেই। আমি বার বার তাই পুলিশকে বলেছিলাম গোটা ধুলিয়ান শহরকে কন্টেনমেন্টের আওতায় এনে ব্যবস্থা নিতে।’’
ঝাড়খণ্ড লাগোয়া ভাসাই পাইকরের প্রধান আব্দুর রউফ বলছেন, “এক মাস ধরে টোটো ভাড়া করে মাইকিং চলছে। ১০ টাকার মাস্ক দিয়েছি এলাকায়। তবু বেপরোয়া ভাবেই মানুষ চলছে রাস্তায় মাস্ক ছাড়াই।”