ঘর নিয়ে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত জেলার সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা শুরু হয়েছে। ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর নিয়ে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত জেলার সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা শুরু হয়েছে। পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করার পাশাপাশি এই রকম একাধিক কর্মীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় দু’জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।
এর পাশাপাশি উপভোক্তাদের বিরুদ্ধেও পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে। জেলায় বেশ কয়েক জন উপভোক্তাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
সমীক্ষার সময় চার জন জন সরকারি মোটিভেটর ও ফেসিলেটেটর-এর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ধরা পরে। চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। হাঁসখালি ও কৃষ্ণনগর ১ ব্লকের দু’জন কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর পাশাপাশি শান্তিপুর, তেহট্ট ১ ও ২ ব্লক এবং কৃষ্ণনগর ২ ব্লকের পাঁচজন কর্মী আছেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। এদের সবাইকেই কাজ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ‘স্থায়ী ওয়েটিং লিস্ট’-এ নদিয়া জেলায় প্রায় ১ লক্ষ ৭৫ হাজার উপভোক্তার নাম ছিল। সমীক্ষায় প্রচুর অনিয়ম, কারচুপি ও প্রতারণার ঘটনা সামনে আসা শুরু করে। ফলে একের পর এক নাম বাদ যেতে থাকে। সব মিলিয়ে ২৫ হাজার ৭৬৫ জনের নাম বাদ যায় তালিকা থেকে। যোগ্য উপভোক্তাদের টাকা দেওয়া হতে থাকে।
কিন্তু সেখানেও অনিয়ম ধরা পড়তে থাকে। দেখা যায়, এমন অনেক উপভোক্তা আছেন যাঁরা টাকা নিয়েও ঘর তৈরি করেননি। তাঁদের চিহ্নিত করে নোটিস পাঠিয়ে ঘর তৈরি করতে অথবা টাকা ফেরত দিতে বলা হয়। তাতে কেউ-কেউ টাকা ফেরত দিলেও অনেকে তা করেননি। গত সাত মাসে জেলায় এই রকম মোট ১৭টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তাতে ৩১৪ জন উপভোক্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
জেলা পুলিশের দাবি, এঁদের মধ্যে অনেক উপভোক্তা অত্যন্ত গরীব। তাঁরা পরিযায়ী শ্রমিক এবং ঘরের টাকা নিয়ে কর্মসূত্রে অন্য রাজ্যে চলে গিয়েছে। তাঁদের গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না। আবার কেউ-কেউ মারা গিয়েছেন। যেমন, কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকেই ১৭ জন উপভোক্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। তাঁদের ভিতর চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এক জন টাকা ফেরত দিয়েছে। তিন জন মারা গিয়েছেন। আর বাকিরা ভিন রাজ্যে কাজে চলে গিয়েছেন।