রানাঘাট আদালতে গোপাল সরকার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।
রানাঘাট-কাণ্ডে স্কুলে ডাকাতি ও সন্ন্যাসিনীকে ধর্ষণের ঘটনায় ধৃত গোপাল সরকারই ওই ষড়যন্ত্রের অন্যতম চক্রী বলে অভিযোগ করল সিআইডি। শুক্রবার গোপাল সরকারকে রানাঘাট আদালতে হাজির করা হয়। বিচারক তাঁকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার হাবরার গোয়ালবাটি এলাকায় নিজের বাড়ি থেকেই গ্রেফতার হয়েছিলেন গোপাল।
সরকারী আইনজীবী প্রদীপকুমার প্রামাণিক বলেন, “ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৯৫, ৩৯৭ এবং ৩৭৬ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। পরে বিচারকের কাছে ২১২ ও ২১৬ এ ধারা যুক্ত করার আবেদন জানালে বিচারক তা মঞ্জুর করেন।” প্রদীপবাবু জানান, রানাঘাটের ওই ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের ঘটনার আগে ও পরে আশ্রয় দেওয়া ছাড়াও নানা ভাবে সাহায্য করেছিলেন গোপাল। তিনি লুঠ হওয়া টাকার ভাগ পেয়েছেন বলে তদন্তকারীদের দাবি।
সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় রাজমিস্ত্রি গোপাল মাস খানেক আগে ওই স্কুলে মেরামতির কাজ করেছিলেন। স্কুলের ভিতরে সব ব্যবস্থা তাঁর নখদর্পণে ছিল। বাংলাদেশি দুষ্কৃতীর দলকে ওই স্কুলে ডাকাতির বিষয়ে গোপালই পরামর্শ দিয়েছিলেন বলে সিআইডির দাবি। বছর দুয়েক আগে গোপাল বাংলাদেশের খুলনা জেলার মনিরামপুর থেকে এসে হাবরায় বসবাস করা শুরু করেন। গোপালের স্ত্রী অনিতার মেসোমশাই মিলন এই দুষ্কৃতী দলের মূল পাণ্ডা বলে দাবি করছেন সিআইডির তদন্তকারীরা। সিআইডির এক কর্তার কথায়, “মিলন বাংলাদেশি। সে-ও মনিরামপুরের বাসিন্দা। বছর দু’য়েক ধরেই গোয়ালহাটির বাড়িতে মিলন-সহ অন্য দুষ্কৃতীরা আশ্রয় নিত। শুধু উত্তর ২৪ পরগনাই নয়, কলকাতা, মুম্বই, দিল্লি ও দক্ষিণ ভারতের নানা জায়গায় ডাকাতির ঘটনায় এই দলটি জড়িত বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
সিআইডির এক কর্তার কথায়, “ধৃত সেলিমকে দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে। ওই দুষ্কৃতীদের ভারত ও বাংলাদেশে কোথায় কোথায় ডেরা রয়েছে, তার হদিস করার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।”
বৃহস্পতিবার ভোরে সেলিমকে মুম্বই থেকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, স্থানীয় এক দুষ্কৃতীর ডেরায় সেলিম গিয়ে গা-ঢাকা দিয়েছিল। গোপালকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই সেলিমের হদিস পেয়েছে সিআইডি। দুষ্কৃতীদের কাছে বৈধ পাসপোর্টও রয়েছে বলে তদন্তে জানতে পেরেছেন সিআইডির কর্তারা।