রাতে অন্ধকার ফুঁড়ে মোটর বাইকটি এসে দাঁড়িয়েছিল তাঁদের সামনে। এক জন প্রথমে সাইকেলে ঝোলানো ব্যাগটা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। বাধা দিলে সটান পায়ে গুলি। বৃহস্পতিবার রাতে রানাঘাট পূর্ণনগর ফুলবাজার এলাকার ওই ঘটনায় গুরুতর জখম হন হরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী। তাঁকে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কল্যাণীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্বাতী ভাঙালিয়া বলেন, “দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন রাত দশটা নাগাদ দোকান বন্ধ করে সাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন হরেন্দ্রনাথ। ছেলে স্মরজিৎ ও কর্মচারী মিঠুন রায় তাঁর পিছনে মোটরবাইকে আসছিলেন। সাইকেলে ঝোলানো ব্যাগে ছিল সোনা ও রুপোর গয়না। কয়েক হাজার নগদ টাকাও ছিল। বাড়ির কাছে যেতেই গলির মধ্য থেকে একটা বাইক থেকে নেমে আসে এক যুবক। তার হাতে একটা আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। মুহূর্তের মধ্যে আরও দু’জন তাঁর সামনে এসে দাঁড়ায়। তাঁদের এক জন হরেন্দ্রনাথবাবুর সাইকেলে থাকা ব্যাগটা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। বাধা দিলে পায়ে গুলি ছোড়ে। হরেন্দ্রনাথবাবুর কথায়, ‘‘গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরেও আমি ব্যাগটা শক্ত করে ধরেছিলাম। তখন ওরা স্মরজিতের বুকে আগ্নেয়াস্ত্র ধরে। তখনই ব্যাগটা ছেড়ে দিতে বাধ্য হই।’’ ওই ঘটনার পরে দুষ্কৃতীরা রানাঘাটের দিকে চম্পট দেয়। পরে হরেন্দ্রনাথ, তাঁর ছেলে ও কর্মচারীর চিৎকারে আশপাশের লোক ছুটে আসেন। তাঁরাই ওই ব্যবসায়ীকে হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে হরেন্দ্রনাথ বলেন, “এ সব গয়না অন্য লোকের। দুষ্কৃতীরা আমার সব শেষ করে দিল।”
স্থানীয় বাসিন্দারা এ দিন জানান, যে রাস্তা দিয়ে হরেন্দ্রনাথবাবু বাড়ি ফিরছিলেন সেই পথে কোনও রকম আলো নেই। আর সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে দুষ্কৃতীরা। পুলিশের অনুমান, বাড়ি ফেরার সময় ও ব্যাগে গয়না থাকার খবর দুষ্কৃতীরা আগে থেকেই জানত। কিন্তু অন্ধকার রাস্তায় বিপদ আছে জেনেও ঝুঁকি নিয়ে সাইকেলে রোজ রাতে গয়না নিয়ে হরেন্দ্রনাথবাবু ফিরতেন কেন? ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী গীতারানি বিশ্বাসের দাবি, “দোকানের অবস্থা ভাল নয়। সেই কারণেই গয়না ও টাকা উনি দোকানে রাখেন না। রাতে সব বাড়ি নিয়ে আসেন। সকালে আবার ব্যাগে নিয়ে যান। সেটাই এখন কাল হল।’’