পুলিশকর্তাদের সঙ্গে পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র।
ওরা আট জন। নবম শ্রেণির ছাত্রী সঞ্চিতা সরকার, দশম শ্রেণির সোনামণি মণ্ডল, দ্বাদশ শ্রেণির ভারতী সিংহ সহ পাঁচ সহপাঠী। ফরাক্কার বিভিন্ন গ্রামীণ স্কুলের পড়ুয়া।
বুধবার থানায় ঢুকে তারা ঘুরে ঘুরে দেখল পুলিশের কাজকর্ম। জানল ডায়েরি জমা দিতে হয় কোথায়, অভিযোগই বা জানানো যায় কী ভাবে? নিজেদের প্রাপ্য অধিকার রক্ষায় করণীয় কী, কী ভাবেই বা তা পেতে পারে কেউ ভোট দেওয়ার অধিকার।
ভয় কাটিয়ে অধিকার বোঝাতে ফরাক্কার গ্রামীণ এলাকার আট জন স্কুল পড়ুয়া কিশোরীকে নিয়ে গিয়ে ঘুরিয়ে দেখানো হল থানা ও ব্লক অফিসের রাজকর্ম। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে আইসিডিএস দফতরের ব্যবস্থাপনায় সামিল ছাত্রীরা অবশ্য খুশি এই আয়োজনে।
বেলা ১২ টা থেকে ২টো পর্যন্ত এই সফরে তাদের সঙ্গ দিলেন থানার আইসি ও বিডিও সকলেই। দু’জনের কথাতেই ফুটে উঠল এই উদ্যোগের প্রশংসা। উপস্থিত ৮ ছাত্রীর ৭ জনেরই অবশ্য কোনও পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই থানায় আসার। এদের একজন সুহানা পারভিনের থানায় আসার অভিজ্ঞতা অবশ্য তেমন সুখকর নয়। নিউ ফরাক্কার একাদশ শ্রেণির ছাত্রী সুহানা তার সেই অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন এদিন থানার আইসি জয়দেব ঘোষকেও। সুহানার কথায়, ‘‘মায়ের সঙ্গে সেদিন থানায় এসেছিলাম একটি ডায়েরি করতে। বার বার বলেও দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়েছিল থানার বাইরে। কয়েক ঘণ্টা কেটে গেছিল সে ডায়েরি লেখাতে।’’
আইসি জয়দেব ঘোষ অবশ্য বলছেন, ‘‘কেউ কখনও থানায় এসে এ রকম হয়রানির মুখে পড়লে সরাসরি ফোন করবে থানার সামনে লেখা আমার মোবাইল নম্বরে। অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তা ছাড়া এখন ডায়েরি লেখাতে আর থানায় আসতেই হবে না কাউকে। হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে অভিযোগ লিখে পাঠালেই ডায়েরির নম্বর তোমার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে।’’ প্রতেকের হাতে তুলে দিলেন পুলিশের সেই হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর।
এরপরই মেয়েদের সঙ্গে নিয়ে ঘুরিয়ে দেখানো হল কোথায় অভিযোগ লেখাতে হয়, থানায় কোনও ফোন এলে সঙ্গে সঙ্গে কী ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয় সবটাই। এরপর গন্তব্য ফরাক্কার বিডিও অফিসে। সেরে তাদের ছাত্রী হিসেবে প্রাপ্য অধিকার কী? কী ভাবেই বা সে অধিকার বুঝে পাওয়া সম্ভব?
বিডিও রাজর্ষি চক্রবর্তী তাদের জানান, ‘‘১৮ বছর হলে ভোট দেওয়ার অধিকার পাবে তোমরা। নির্দিষ্ট ফর্মে আবেদন করলে তোমাদের ভোটাধিকার মিলবে।’’