গ্রামের একটি স্কুল। নিজস্ব চিত্র।
জেলা মুর্শিদাবাদের। থানা টিঠিডাঙ্গা। তবে সবার নয়। একই গ্রামেরই প্রতিবেশীরা থাকেন ভিন্ন ভিন্ন চারটি থানার অধীনে। অবাক লাগলেও এটাই সত্যি।
টিঠিডাঙ্গা গ্রামে কয়েক পুরুষের বাস মণ্ডল পরিবারের। পরিবারে সদস্য সংখ্যা বাড়তে থাকায় আদি ভিটে ছেড়ে ওই গ্রামেরই বিভিন্ন পাড়ায় জমি কিনে ঘর বাঁধেন অন্যান্যরা। ওই একই পরিবারের চার সদস্য একই গ্রামে বাস করলেও প্রশাসনের সৌজন্যে তাঁরা চারটি থানার অধীনস্থ। একই গ্রাম অথচ চারটি গ্রাম। এ নিয়ে নাজেহাল গ্রামবাসীরা।
মুর্শিদাবাদের একেবারে শেষ প্রান্তে অবস্থিত টিঠিডাঙ্গা। তবে বীরভূম জেলারও বেশ কিছুটা অংশ রয়েছে এই গ্রামের মধ্যে। টিঠিডাঙ্গা গ্রামটিই দু’টি প্রতিবেশী জেলার সীমানা দিয়ে ভাগ হয়েছে। একে দুই জেলা, তার উপর চারটি থানা। এই সীমা ভাগের গেরোয় সমস্যায় টিঠিডাঙ্গার আট থেকে আশি। পারিবারিক ঝামেলা হোক, জমি নিয়ে বিবাদ, চট করে কোন থানায় যাবেন, গুলিয়ে ফেলেন বাসিন্দারা। প্রয়োজন হলে কোন থানায় যাবেন, বুঝেই উঠতে পারেন না অনেকে। গ্রামের নাম টিঠিডাঙ্গা। তবে বাসিন্দাদের কারও কারও থানা নবগ্রাম, কারও মারগ্রাম, কারও নলহাটি তো কারও খড়গ্রাম!
সমস্যার অন্ত নেই। ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে বীরভূমের কোনও একটি স্কুলে। অথচ, বসবাস মুর্শিদাবাদের গ্রামে। এ ভাবে চলতে চলতে নাজেহাল দশা আসলাম শেখ, আশিক মণ্ডলদের। তাঁদের দাবি, সীমানা নির্দিষ্ট করে কোনও একটি থানার অন্তর্ভুক্ত করা হোক তাঁদের। প্রশাসনিক কাজকর্মে এই হয়রানি বন্ধ হোক।
গ্রামবাসীদের এই সমস্যার কথা অবশ্য কারও অজানা নয়। গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যরাও মেনে নিচ্ছেন, ঝামেলা আছে। সমাধান কোন পথে, সেটাও খুঁজছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি আধিকারিক বলেন, ‘‘নতুন জেলাভাগের ঘোষণার পর সীমানা পুনর্বিন্যাসের খসড়া জমা পড়েছে। তাতে ওই গ্রামের অসুবিধার কথা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে।’’ প্রসঙ্গত, সম্প্রতি নদিয়া, মুর্শিদাবাদ-সহ সাত জেলা ভাগের ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। টিঠিডাঙ্গার বাসিন্দারা প্রত্যাশা করছেন, এ বার হয়তো সমস্যা মিটবে। না হলে সোজা মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন তাঁরা।