সিনেমা হল থেকে বেরিয়ে। নিজস্ব চিত্র
ইদে প্রতি বছর নিয়ম করে সলমন আসেন, জিৎ আর দেব-ও আসেন। এ বছর অবশ্য দেব বাদ গিয়েছেন, তার বদলে সাকিব আছেন, আর আছে জুরাসিকের ডাইনোসর। বাংলা ডাবিং-সহ!
এরা ছাড়া ইদের বিকেল যে ফিকে, তা একবাক্যে স্বীকার করেন ফিরোজ, আলতাফ, নাগমা, মনজুরা, আলি-রা।
গোটা পরিবার সেজেগুজে প্রেক্ষাগৃহের আঁধার-ঠান্ডা ঘরে প্রিয় নায়ক-নায়িকাদের সঙ্গে হাসিকান্নায় ভাসতে না-পারলে ইদের আনন্দটা ভরভরন্ত হয় না অধিকাংশরই। সেটা সর্বজনবিদিত বলেই তো এই সময়ে নতুন ছবি রিলিজের হিড়িক। ইদের দিন থেকে শুরু করে প্রায় এক সপ্তাহ মারকাটারি টিকিট বিক্রি নদিয়া-মুর্শিদাবাদের সিনেমা হলগুলিতে।
মুর্শিদাবাদের হিজল, লালগোলা, শেরপুর, ভগবানগোলা রানিতলা, বেলডাঙা, ইসলামপুর, ডোমকল, জলঙ্গি, জঙ্গিপুর, হরিহরপাড়ার মতো অনেক এলাকার বিশেষত খেটে খাওয়া দিনমজুর, শ্রমিক পরিবারের মহিলাদের মধ্যে এই সময় চলে অন্য ধরনের প্রতিযোগিতা। কার স্বামী ইদের দিন কাকে কত দামি হলে নিয়ে গিয়ে কত ভাল ‘বই’ দেখিয়েছেন আর তা দেখার সময় কত ভাল খাবার খাইয়েছেন, তা নিয়ে। মুর্শিদাবাদে ভিন রাজ্যে কাজ করা মুসলিম শ্রমিক সবচেয়ে বেশি লালগোলায়। সেখানে মাস তিনেক ধরে স্থানীয় সিনেমা হলটি বন্ধ। তাই শনিবার বিকেলে অনেকেই ট্রেনে চেপে বহরমপুরের ঋত্বিক সদন, সূর্য সিনেমা হল অথবা শিল্প তালুকের ভিতরের মাল্টিপ্লেক্সে পৌঁছে গিয়েছেন। কোথাও চলছে সুলতান, ভাইজান বা রেস ৩।
কান্দির শীততাপ নিয়ন্ত্রিত সিনেমা হলে চলছে ভারত বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগের ‘ভাইজান এল রে’। সেখানকার এক কর্মচারী বলেন, ‘‘আগামী এক সপ্তাহ ‘হাউসফুল’ বোর্ড উঠবে না।’’
নদিয়ার তেহট্টের প্রান্তিকে চলছে ‘রেস ৩’, নাজিরপুর আরাধনায় ‘সুলতান’, বার্মিয়ার অনিতায় ‘ভাইজান’— সর্বত্র উপচে পড়া ভিড়। করিমপুরের একমাত্র সিনেমাহলটি বন্ধ। সেখান থেকে দুপুরে বিরিয়ানি, সেমুই খেয়ে অনেকেই বৌ-ছেলেমেয়ে নিয়ে রওনা দিয়েছেন জলঙ্গিতে, সিনেমা দেখতে। কৃষ্ণনগর মাল্টিপ্লেক্সের মালিক হীরক সরকার বলেন, ‘‘রেস ৩ ভালই চলছে। তবে যতটা ভিড় আশা করেছিলাম ততটা হয়নি।’’ হাড্ডাহা়ড্ডি চলছে সলমন আর জিতের। চাকদহ, রানাঘাটও কল্যাণীতে সিনেমা হল ও মাল্টিপ্লেক্সে ইদের দিন তাঁদের দু’জনেরই ছবি কোথাও ‘হাউস ফুল’, কোথাও ‘হাউস ফুল’ হওয়ার মুখে।