Fishing

ভিক্ষে করব, পদ্মামুখো আর হব না

নিজের দেশের জেল হলেও এক রকম কথা ছিল।

Advertisement

প্রণব মণ্ডল

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২০ ০৩:২৯
Share:

প্রতীকী ছবি

জেলখানায় বসে বারবার মনে পড়তো বৃদ্ধ মায়ের মুখটা। মনে হত কোনও দিন যদি ফিরতে পারি, মায়ের সঙ্গে আর দেখা হবে তো! ডুকরে উঠতাম ভিন্ দেশের জেলে বসে। সামান্য মাছ ধরতে গিয়ে যে এমন শাস্তি পেতে হবে, কখনও কল্পনাও করিনি। টানা পাঁচটা মাস জেলবন্দি থাকতে হল আমাকে, আর সেই সঙ্গে আমার গোটা পরিবারকে দিন কাটাতে হলো অর্ধাহারে-অনাহারে।

Advertisement

নিজের দেশের জেল হলেও এক রকম কথা ছিল। ভিন্ দেশের জেলে বসে নিজেকে বড্ড অসহায় মনে হত, অনেকেই বলতো এখান থেকে বেরিয়ে যাওয়া খুব কঠিন হবে তোমার জন্য, অনেক আইনি জটিলতা কথা শুনে মাঝে মাঝে হাল ছেড়ে দিতাম ঘরে ফেরার। আর তখনই মনে পড়তো মায়ের মুখটা।

সে দিনটা মনে পড়ে, ঘন কুয়াশায় ভরা সকাল, বিএসএফের কাছে অনুমতি নিয়ে পদ্মায় নেমেছিলাম মাছ ধরতে। এখনও পর্যন্ত আমি জানি না ভারতীয় জলসীমানা আমি পেরিয়ে গিয়েছিলাম কিনা। কিন্তু হঠাৎ করেই মাঝপদ্মায় বিজিবি এসে আমাদের তিন জনকে ধরে নিয়ে গেল। দু’জনকে ছেড়ে দিয়ে বলল, বিএসএফকে খবর দিতে, তারা গিয়ে আমাকে নিয়ে যাবে। তারপরে যা ঘটেছে, তা আর মনে করতে চাই না। সেদিনের ঘটনা এখনও মনে হলে চমকে উঠি। তবে জেলের মধ্যে অনেকেই সান্ত্বনা দিয়েছে, আশ্বস্ত করেছে। শেষ পর্যন্ত আইনি জটিলতা কাটিয়ে ঘরে ফিরতে পেরেছি এটাই বড় কথা। ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি আমার মতো অবস্থা যেন কারও না হয়।

Advertisement

পদ্মাপারের দাঁড়িয়েই এদিন রাজশাহী শহরটার দিকে বারবার তাকিয়েছি আমি। পদ্মার জল কেউ নমস্কার করে এসেছি। বাপ দাদার হাত ধরে যে পদ্মাকে চিনেছিলাম, সেই পদ্মাপারে দাড়িয়েই বলে এসেছি, আর না। প্রয়োজন হলে ভিক্ষে করে খাব কিন্তু পদ্মা মুখো আর হব না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement