ফিরহাদ হাকিম। — ফাইল চিত্র।
জেলা কমিটি নিয়ে জঙ্গিপুরের তৃণমূল নেতাদের মধ্যেকার বিরোধ মেটাতে শনিবার ঘণ্টা তিনেকের সফরে রঘুনাথগঞ্জে আসছেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। হেলিকপ্টারে করে তার এই দলীয় সফরকে অবশ্য সরকারি সফর বলেই ধরা হচ্ছে। কারণ ওই দিন বেলা ১২টায় জঙ্গিপুর পুরসভায় উন্নয়ন নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক করবেন ফিরহাদ। পরে ভবঘুরেদের থাকার জন্য একটি ভবন “আতিথ্য”র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন পুরমন্ত্রী। যদিও দু’সপ্তাহ আগেই এই ভবনের উদ্বোধন করেছেন জঙ্গিপুরের পুরপ্রধান মফিজুল ইসলাম। সেটি বর্তমানে চালুও রয়েছে।
পুরভবন থেকে ফিরহাদের যাওয়ার কথা নেতাজী সুভাষ দ্বীপে। পুর-অনুষ্ঠান সেরে রঘুনাথগঞ্জের মঙ্গলজনে যাবেন জঙ্গিপুরের সভাপতি ও সাংসদ খলিলুর রহমানের বাড়িতে। খাওয়া দাওয়া সেরে সেখানেই বিধায়ক ও ব্লক সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। সেখানে জেলা কমিটির বিশিষ্ট কিছু সদস্যদেরও ডাকা হয়েছে।
গত ১২ এপ্রিল জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার কমিটি ঘোষণা করেন সভাপতি খলিলুর রহমান। ১৯৬ জনের বিশাল জেলা কমিটি ঘোষণার মধ্যেই সাংবাদিক বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান সুতির বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস ও তার অনুগত সুতির দু’টি ব্লকের দুই সভাপতিও। বাইরে বেরিয়েই ইমানি তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন সভাপতি খলিলুরকে। সাংবাদিক বৈঠক ডেকে তাঁকে সরাসরি ‘কংগ্রেস ও সিপিএমের দালাল’ বলে চিহ্নিত করে ইমানি বলেন, “তৃণমূলকে বিক্রি করে দিতে চাইছেন তিনি কংগ্রেস ও সিপিএমের কাছে। তাই আগামী লোকসভায় তাঁকে জঙ্গিপুর থেকে আর আমরা দেখতে চাই না। সাগরদিঘিতে হারের জন্যও তিনিই দায়ী।”
ইমানির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তোপ দাগেন খলিলুরও। দুই তরফেই রাজ্য কমিটির কাছে পরস্পরের বিরুদ্ধে নালিশ জানানো হয়। তার ভিত্তিতেই ফিরহাদ জঙ্গিপুরে এসে তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, প্রয়োজনে জেলা কমিটি থেকে কাউকে বাদ দেবেন বা কাউকে নতুন করে ঢোকাবেন বিরোধ মেটাতে। কিন্তু তাতে জেলা কমিটি নিয়ে বিরোধ কতটুকু মিটবে তা এখনও নিশ্চিত নয়।
সাগরদিঘিতে ব্লক কমিটি গঠন নিয়ে রাজ্য কমিটি ও জেলা কমিটির মধ্যে দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে। বর্তমানে সাগরদিঘিতে ব্লক সভাপতি বিধানসভায় পরাজিত প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। দলনেত্রীর সম্পর্কে মামাতো ভাই তিনি। ভোটে শোচনীয় ভাবে হেরে যান তৃণমূল প্রার্থী দেবাশিস। তাই জেলার নেতাদের তীব্র আপত্তি দেবাশিসকে দলের ব্লক সভাপতি রাখার ব্যাপারে। রাজ্য কমিটির কাছে বিকল্প নামও দিয়েছেন তারা। কিন্তু দলীয় সূত্রের খবর, রাজ্য কমিটি দেবাশিসকে সরাতে সংশয়ে রয়েছেন। ব্লক কমিটিহীন সাগরদিঘিতে তৃণমূল এখন টালমাটাল অবস্থায় পড়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এলে তা মিটবে বলে অনেকের মত।