তৃণমূলের সভায় বহরমপুরে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
দুয়ারে পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর তাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে। দু’দিন আগে বহরমপুরে জনসভা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। আর রবিবার বিকেলে সেখানেই রাজ্যের চার মন্ত্রী, একাধিক বিধায়ক, সাংসদের উপস্থিতিতে সভা করল তৃণমূল। সেখানে রাজ্যে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম থেকে শুরু করে পরিবহরণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, মুর্শিদাবাদের সাংসদ আবু তাহের খান, জেলা তৃণমূল সভানেত্রী শাওনি সিংহরায় একযোগে সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপিকে নিশানা করেছেন।
এ দিন দুপুরের পর থেকে বহরমপুরের টেক্সটাইল মোড়ে দলের লোকজন জড়ো হতে থাকেন। ভিড় সামাল দিতে টেক্সটাইল মোড়ের পাশাপাশি কর্মীদের ব্যারাক স্কোয়ারে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। জেলা তৃণমূল সভাপতি শাওনি সিংহরায় বলেন, ‘‘এ দিনের সভায় ৫০ হাজারের উপরে মানুষ এসেছিলেন। তাঁর জন্য কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।’’
এ দিনের সভায়এদিন ফিরহাদ সভায় বলেন, ‘‘২০১৬ সালে কলকাতায় সেতু ভেঙেছিল। আমি তখন পুরমন্ত্রী। তার মধ্যে মোদীজি একটি সভায় বলছিলেন, ‘‘দিদি ভগবান নাকি দেখিয়ে দেয় ব্রিজ ভাঙিয়ে দিয়ে। আজ ব্রিজ ভেঙেছে, কাল বাংলা তছনছ হয়ে যাবে। সেই মোদীজিকে জিজ্ঞেস করি আপনাদের জন্য গুজরাতে সেতু ভেঙে পড়ে ২০০ মানুষ মারা গিয়েছেন। আপনারা কাটমানি খেয়েছেন। এ বারে কী ভগবান দেখাচ্ছেন আগে ব্রিজ ভাঙছে, পরে গুজরাতের সরকার ভাঙবে। আর ২০২৪ সালে মোদীজি চলে যাবেন।’’
আবার কখনও অধীরের নাম করে, কখনও নাম না করে একাধিক বার কটাক্ষ করেছেন। দু’দিন আগে বহরমপুরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির সভায় বিজেপি লোক পাঠিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন। এছাড়া দলের ব্লক সভাপতি, বিধায়ক সাংসদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার পরামর্শও দিয়েছেন ফিরহাদ। এদিন সন্ধ্যায় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘জেলায় তৃণমূল অনেক শক্তিশালী। এখানে কংগ্রেস, বিজেপি ও সিপিএম অপরকে সাপোর্ট দেবে। এখানে কংগ্রেস সাংসদ জেতার পর দুটো সিট বিজেপি পায়। এর পিছনে কী চক্রান্ত আছে আমি জানি না। তবে যতই চক্রান্ত করুক, আমাদেরকে আটকাতে পারবে না। তিন শক্তি এক হলেও আমরা ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতে জিতব।’’
তবে বহরমপুরের কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক তথা দলের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সরকারি বদান্যতায় হওয়া তৃণমূলের ওই সভা পুরোপুরি ফ্লপ। আমাদের থেকেও তাঁদের সভায় লোকজন কম এসেছিল।’’ জেলা বিজেপির সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, ‘‘আমরা নই, কংগ্রেসের সভায় লোক পাঠিয়েছিল তৃণমূল। এই জেলায় নিজের শক্তিতেই আমরা দু’টি আসনে জয়ী হয়েছি।’’