ছেলে তৃণমূল নেতা। বৌমা তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান। কংগ্রেস সমর্থক বাবার বিরুদ্ধে উঠল বোমা ছোড়ার অভিযোগ। —প্রতীকী চিত্র।
ছেলে তৃণমূল নেতা। বাবা আবার কংগ্রেসের কট্টর সমর্থক। সেই ‘পিতা-পুত্রের’ ঝামেলায় তটস্থ এলাকাবাসী। শনিবার রাতে বাবা-ছেলের মারামারিতে আতঙ্ক ছড়াল এলাকায়। বোমা বিস্ফোরণে এলাকা ভরল ধোঁয়ায়, উড়ে গেল বাড়ির টিনের চাল। মুর্শিদাবাদের রানিনগরের ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রানিনগর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল যুব সভাপতি আনসার আলি শেখ। তাঁর স্ত্রী শেফালি শেখ আবার পঞ্চায়েত প্রধান। গত পঞ্চায়েত ভোট থেকে গোটা পরিবারই শাসকদলের সমর্থক। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের সময় থেকে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তন করেছেন আনসারের বাবা জহিরউদ্দিন শেখ। তিনি কংগ্রেসের সমর্থক। এখন এই রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে পারিবারিক বিবাদ চরমে উঠেছে। শনিবার গভীর রাত থেকে বোমাবাজি শুরু হয় জহিরউদ্দিন এবং আনসারের বাড়িতে। মুহুর্মুহু বোমার শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। প্রতিবেশীরা ধড়ফড় করে উঠে পড়েন ঘুম থেকে। অনেকে আবার আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করেন।
প্রতিবেশীদের অভিযোগ, বাবা-ছেলের রাজনৈতিক ঝগড়ায় বোমাবাজি হয়েছে। অন্য দিকে, তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান এবং তাঁর স্বামী গোটা ঘটনার দায় চাপিয়েছেন বাবার উপর। ছেলে আনসারের অভিযোগ, বাবা তাঁকে খুন করতে চান। তাঁর কথায়, ‘‘আমি তৃণমূল করি। এই আক্রোশে বাবা আমাকে মেরে ফেলতে চায়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এই ঘটনার মূলচক্রী আমার বাবা। আমাকে সরিয়ে পঞ্চায়েত ভোটে কংগ্রেসের হয়ে এলাকা দখল করতে চাইছে।’’ যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওটা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে, জহিরউদ্দিন বলেন, ‘‘খুন-জখমের রাজনীতি তৃণমূলের সংস্কৃতি হতে পারে, কংগ্রেসের নয়।’’
ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে নিজেদের বাড়িতে বোমাবাজি হচ্ছে, এ নিয়ে বিস্মিত এলাকাবাসী। বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় রানিনগর থানার পুলিশ বাহিনী। রবিবার পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ির কাছে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। শেষ পর্যন্ত পাওয়া খবরে অভিযুক্ত জহিরুদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।