থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ‘চায়না’ রসুন। মঙ্গলবার বেতাইয়ে। —নিজস্ব চিত্র।
‘চায়না’ রসুনের দাপটে ক্রমশ কোণঠাসা হচ্ছেন স্থানীয় চাষিরা। রসুন বাজার ছেয়ে গিয়েছে এই রসুনে। দামও অপেক্ষাকৃত কম হওয়ার ক্রেতারা সেই দিকে ঝুঁকছেন। ফলে হঠাৎ করে কমে গিয়েছে দেশি অর্থাৎ স্থানীয় রসুনের চাহিদা। যার প্রভাব পড়ছে দেশি রসুনের দামে। ফসলের দাম কম পাওয়ায় সঙ্কটে পড়েছেন স্থানীয় রসুন চাষিরা। তার জেরে মঙ্গলবার তেহট্টের বেতাইলাল বাজারে ঢুকে বিক্ষোভ দেখান এক দল রসুন চাষি। তাঁরা বিভিন্ন আনাজের দোকান থেকে বেশ কয়েক বস্তা ‘চায়না’ রসুন তুলে নিয়ে গিয়ে থানায় জমা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে তাঁরা এই রসুনকে আস্বাস্থ্যকর ও ক্ষতিকারক দাবি করে না-কেনার জন্য ক্রেতাদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, পরিষ্কার ও বড় কোয়ার রসুনকে ‘চায়না’ রসুন বলা হচ্ছে। বাজারে যা কম দামে বিক্রি হচ্ছে। রসুন চাষি বাবলু বিশ্বাস, রথীন ঘোষের দাবি, ‘‘আমরা শুনেছি এই রসুন শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। চিন থেকে আমদানি করা হচ্ছে। যে কারণ আমরা এই রসুন না খাওয়ার জন্য সবার কাছে আবেদন করছি।” তাঁদের অভিযোগ, ‘‘এই রসুন বিক্রি বন্ধ না-হলে আমাদের উৎপাদিত দেশি রসুনের দাম পাব না। কারণ ‘চায়না’ রসুনের দাপটে দেশি রসুনের চাহিদা কমছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’’ স্থানীয় রসুন চাষিদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, গত বছর ২০ হাজার টাকায় এক কুইন্টাল রসুন বিক্রি হয়েছে। এ বছর বাজারে যথেষ্ট চাহিদা থাকা সত্ত্বেও দেশি রসুন কেনার লোক না-থাকায় তাঁরা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন।
বেতাই এলাকায় প্রচুর রসুন উৎপাদিত হয়। ‘চায়না’ রসুনের কারণে তাঁদের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই। জেলার কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিক বুদ্ধেশ্বর কর বলেন, ‘‘আমরাও এই রসুন সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিচ্ছি। তবে সরসারি ভাবে এখনও পর্যন্ত ওই রসুন বিক্রি বন্ধের কোনও নির্দেশিকা আসেনি। তেমন কোনও নির্দেশ এলে অবশ্যই পদক্ষেপ করা হবে।” তবে কল্যণীর বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক তথা রাজ্য উদ্যান পালন দফতরের অন্যতম পরামর্শদাতা তপন মাইতি বলছেন, ‘‘এই জাতের রসুন ক্ষতিকর নয়। তবে এই রসুনের সঙ্গে সঙ্গে গাছের জন্য ক্ষতিকারক জীবাণু আমাদের এখানে ঢুকে পড়তে পারে। তাতে দেশি রসুন চাষে ক্ষতি
হতে পারে।’’