পরিচর্যা: বাড়ির বীজ দিয়ে শুরু চাষ। ডোমকলে। নিজস্ব চিত্র
সস্তার পাট বীজের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন দক্ষিণবঙ্গের দুই জেলা— নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের চাষিরা। জুট কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার শাখাগুলিতে চাষিদের আনাগোনা লেগেই রয়েছে। কিন্তু বার বারই চাষিদের শুনতে হচ্ছে— এখন বীজের জোগান নেই। আর কয়েকটা দিন পরে আসুন। কয়েকদিন পরে গিয়ে একই কথা শুনতে হচ্ছে চাষিদের। ফলে বাধ্য হয়ে তাঁরা খোলা বাজার থেকে বেশি দাম দিয়ে বীজ কিনছেন। অনেক সময় প্রয়োজনের তুলনায় কম বীজ মিলছে।
বাবলারির পাট চাষি বাবলু রুদ্র কিংবা মানিক বিশ্বাসেরা জানান, অনেক ঘোরাঘুরির পর শেষ পর্যন্ত মার্চের চতুর্থ সপ্তাহে যখন বীজ আসে। কিন্ত তা ছিল অপর্যাপ্ত। মাথা পিছু মাত্র মাত্র চার কেজি বীজ বরাদ্দ হয়। তাই নিয়েই ‘সন্তুষ্ট’ থাকতে হয়েছে ওঁদের।
পাট বোনার চলতি মরসুমে এই ছবিটা গোটা জেলার। নিরুপায় চাষিরা খোলা বাজারে বীজ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘‘বাজারি বীজের শুধু যে দামই বেশি তা নয়, সে বীজের গুনগত মান নিয়েও বহুক্ষেত্রেই প্রশ্ন ওঠে।’’
বড় আন্দুলিয়ার চাষি রবীন্দ্রনাথ দত্ত বলেন “সরকারি বীজের দাম কম। কিন্তু ফলন বেশি। কিন্তু বীজ পাওয়াই মুশকিল। বাধ্য হয়ে বেশি দরে খোলা বাজার থেকে বীজ কিনতে হচ্ছে।’’ দু’কেজি সরকারি সার্টিফায়েড বীজের দাম ২৫০ টাকা। খোলা বাজারে যার দাম ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। কোথাও বিকোচ্ছে আরও বেশি দরে। জুট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার কৃষ্ণনগর রিজিওনের ম্যানেজার জিতেশ সরকার জানান, প্রয়োজনের তুলনায় বড় জোর পঁচিশ শতাংশ বীজ এসেছে। কেন্দ্র থেকে বীজ না এলে তাঁদের কিছু করার নেই।
একই অবস্থা মুর্শিদাবাদেরও। জেলা কৃষি দফতরে উপ-অধিকর্তা তাপস কুণ্ডু বলেন, ‘‘জেলায় প্রায় ১ লক্ষ ৭ হাজার হেক্টর জমিতে পাটচাষ হয়। প্রতি হেক্টর জমির জন্য ৬ কেজি বীজ প্রয়োজন হয়।’’ ওই হিসাবে ৬ হাজার ৪২০ কুইন্টাল বীজ প্রয়োজন। অথচ এখনও পর্যন্ত ৮০৪ কুইন্ট্যাল বীজ এসেছে। এমনটাই জানালেন জেসিআই-এর মুর্শিদাবাদের রিজিওন্যাল ম্যানেজার মেঘনাদ সাহা। বহরমপুরের কাটাবাগানের পাট চাষি শামিম আহমেদ বলেন, ‘‘জেসিআই-এর কাছে বীজ নেই। ফলে অনেকটা বেশি দরে বাজার থেকে বীজ
কিনতে হচ্ছে।’’