ফের জমিজটে আটকে যেতে বসেছে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ। দিন পনেরো আগে বেথুয়াডহরির ভাড়াটিয়া ব্যবসায়ীদের বাধায় থেম গিয়েছিল রাস্তার দুই পাড়ের উচ্ছেদ অভিযান। পরে প্রশাসনের মধ্যস্থতায় সমস্যা মেটে। এ বার রাস্তা চওড়া করতে বাধা এল দেবগ্রামের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। শুনানিতে নির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণে অসন্তুষ্ট ব্যবসায়ীরা বৃহস্পতিবার পরিষ্কার জানালেন, ‘জলের দরে’ তাঁরা জমি ছাড়বেন না। এ নিয়ে তাঁরা কালীগঞ্জের বিডিওকে স্মারকলিপিও দেন।
২০১৩ সালের মাঝামাঝি নাগাদ জেলা প্রশাসন ওই এলাকার জমির দাম নিয়ে শুনানি করে। এলাকার লোকজনের দাবি, এ ব্যাপারে প্রশাসন তাঁদের আগেভাগে কিছুই জানায়নি। ফলে তাঁরা সেখানে অংশ নিতে পারেননি। প্রশাসন একপেশে ভাবে শতকপিছু জমির দাম ধার্য করে ১ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা। যদিও প্রশাসনের দাবি, শুনানির আগে ওই এলাকায় মাইকে প্রচার করা হয়েছিল। আন্দোলনকারীদের কেউ কেউ জানাচ্ছেন, দুই-একজন শুনানিতে হাজির ছিলেন। শুনানিতে নির্ধারিত জমির দামও নিয়ে নেন ব্যবসায়ীরা।
কিন্তু চেক নেওয়ার পরই শুরু হয় জমিহারাদের ক্ষোভ। প্রশাসন নির্মান ভাঙার জন্য পদক্ষেপ করতেই বাধা দিতে থাকেন তাঁরা। ওই ব্যবসায়ীরা জমি রক্ষার জন্য তৈরি করছেন কমিটি। কমিটির যুগ্ম সম্পাদক গৌরাঙ্গ সিংহ বলেন, “এত কম দামে আমরা কিছুতেই জমি দেব না। দেবগ্রাম থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে বেথুয়াডহরি। সেখানে জমির দাম মিলেছে শতক পিছু ১০ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। মীরার মানুষ পেয়েছেন ৬ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। দেবগ্রাম ওই এলাকার থেকে উন্নত। এখানে প্রশাসন শতক পিছু মাত্র ১ লক্ষ চুয়াল্লিশ হাজার টাকা দিচ্ছে।” কমিটির সভাপতি আয়মাদার শেখ বলেন, “প্রশাসন সেই সময় চেক দিয়ে জানিয়েছিল, পরে আরও টাকা দেওয়া হবে। সেই সরল বিশ্বাসে আমরা চেক নিয়েছিলাম। এখন দেখছি ওটা ছিল ফাঁদ।’’
এ দিকে প্রশাসন জানাচ্ছে, একবার শুনানি হয়ে গেলে নতুন করে বেশি দাম দেওয়ার কোনও নিয়ম নেই। তাছাড়া শুনানির সময় ওই এলাকার জমিদাতাদের কথা শোনা হয়েছিল। জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, “আইনত দ্বিতীয়বার একই ইস্যুতে শুনানি করা যায় না। তবে আদালত নির্দেশ দিলে তা সম্ভব। ওখানকার লোকজন স্মারকলিপিতে কী লিখেছেন, তা দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’