এটাই রোজনামচা: মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র
শয্যা রয়েছে সাকুল্যে ১৪০টি। রোগী ভর্তি রয়েছেন প্রায় সাড়ে ৬৫০!
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের এটাই দস্তুর!
ফলে হাসপাতালের শয্যায় মৃত রোগীর পাশেই শুয়ে থাকছে জীবিত রোগী। কোনও রোগী আবার পা তুলে দিচ্ছেন সেই মৃতদেহের পেটের উপরে। যেমনটি ঘটেছিল সোমবার।
হরিহরপাড়ার কানাইলাল মণ্ডল মারা যান সোমবার ভোরে। কিন্তু জীবিত রোগীদের পাশে তাঁকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসেছে স্বাস্থ্যভবন। মঙ্গলবার সকালে স্বাস্থ্যভবন থেকে ফোন করে হাসপাতালের সুপারকে প্রকৃত ঘটনা জানতে চাওয়ার পাশাপাশি মুখ্যসচিব (স্বাস্থ্য) রাজীব সিনহার নির্দেশে পুরো ঘটনা রিপোর্ট আকারে লিখে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
হাসপাতালে সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পরেই সুপার দেবদাস সাহা মেডিসিন বিভাগের নার্স ও চিকিৎসকদের নিয়ে বৈঠক করে স্বাস্থ্যভবনে একটি লিখিত রিপোর্ট পাঠান। সেই রিপোর্টে শয্যাসংখ্যার তিন গুণ বেশি রোগী ভর্তি থাকার কথা উল্লেখ রয়েছে। রোগী মৃত্যুর পরে পৃথক কোনও শয্যায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো পরিকাঠামো না থাকার কথাও রয়েছে।
যদিও হাসপাতালের সুপার বলেন, ‘‘আমি কোনও মন্তব্য করব না। এ ব্যাপারে যা জানানোর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’’
এ দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে কর্তব্যরত নার্সদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন কানাইলাল মণ্ডলের ছেলে দেবব্রত মণ্ডল। তিনি বলছেন, ‘‘বাবাকে রক্ত দিতে ১২ ঘণ্টা দেরি হয়ে গিয়েছিল। সময় মতো রক্ত দিতে পারলে বাবা বেঁচে যেত। যারা গাফিলতি করেছে, লিখিত অভিযোগে তাদের শাস্তির দাবি জানিয়েছি।’’
মেডিসিন বিভাগ কর্তৃপক্ষ ঘরের সংখ্যা বাড়ানোর আবেদন জানিয়ে এখন পর্যন্ত ২০ বার লিখিত চিঠি জমা দিয়েছেন। মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান উদাস ঘোষ বলছেন, ‘‘মেডিসিন বিভাগে শয্যা কোথায়? ঘরের সংখ্যা না বাড়ালে নতুন শয্যা পাতারও জায়গা নেই। আমি শয্যার সংখ্যা বাড়ানোর কথা বলেছি। কেন হচ্ছে না তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন।’’