শব্দ-দানব: বহরমপুরের রাস্তায় হনুমান পুজোর শোভাযাত্রা । নিজস্ব চিত্র
মাধ্যমিক, উচ্চ-মাধ্যমিকের টেস্ট চলছে। স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা দোড়গোড়ায়। তবে, সে সবে তেমন হেলদোল নেই। শব্দ দানব তার পুরনো মেজাজে বেজেই চলেছে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে উৎসবের মরসুম শুরু হয়েছে, মহরম, দুর্গা এবং কালীপুজো উজিয়ে সে উৎসবের ছায়া বয়ে নিয়েছে চলেছে শব্দ। পুলিশের হুঙ্কারও আছে বটে, তবে তাতে রোগী থেকে পরীক্ষার্থী— নাভিশ্বাস উঠেছে সকলের। শীতের প্রাক্কালে পরীক্ষার্থীরা তাই বইয়ের সামনে বসতেও ভরসা পাচ্ছেন না।
বছর কয়েক আগেও শব্দ-তাণ্ডব বাঁধা থাকত মণ্ডপে, এখন ডিজে বক্সের হাত ধরে তা ছড়িয়েছে ভাসান যাত্রাতেও। সঙ্গে দোসর হয়েছে, প্রাক-শীতের বিভিন্ন যাত্রা পালা সঙ্গীতানুষ্ঠান। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার অবশ্য বাঁধা গতে বলছেন, ‘‘পুজোর সময় মাইক, ডিজে বক্স, শব্দ-বাজির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ পুলিশের নজরদারির উপরেও তাঁর অগাধ ভরসা, ‘নজরদারি চলছে।’ পড়ুয়াদের অভিজ্ঞতা অবশ্য সে কথা বলছে না।
গোরাবাজারের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী বলছে, ‘‘সেই দুর্গাপুজোর আগে থেকে চলছে। কখনও মণ্ডপ কখনও ভাসান-যাত্রা শব্দে হৃদকম্প হওয়ার জোগাড়।’’ ইন্দ্রপ্রস্থের এক ছাত্রের কথায়, ‘‘কী বলব বলুন, শব্দ তাণ্ডবে বাড়ি ছেড়ে গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলাম। কিন্তু এখানেও একই হাল।’’ বহরমপুরের গোরাবাজার আইসি আই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত দত্ত বলেন, ‘‘সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে উৎসবের মরসুম শুরু হয়েছে। মাইক, ডিজে’র দাপট তখন থেকে। এ এক অসম্ভব অত্যাচার। পড়ুয়াদের কথা মাথায় রেখে এ সবে একটু রাশ টানা যেত না! এখন টেস্ট পরীক্ষা চলছে। তার পরেই তো বার্ষিক পরীক্ষা।’’