ফেরা: গুলা ও লক্ষ্মী। নিজস্ব চিত্র
গুলা দাসকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাওয়ার পর থেকেই মনমরা হয়ে পড়েছিল লক্ষ্মী। মঙ্গলবার আদালত থেকে জামিন পেয়ে গুলা একছুটে চলে এসেছিল খড়সা গ্রামে। সেখানেই আরও দুই মাহুতের সঙ্গে ছিল উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা সেই কুনকি হাতি, লক্ষ্মী। দূর থেকে গুলাকে দেখেই শুঁড় তুলে ডাকতে শুরু করে হাতিটা। গুলাও গিয়ে তার শুঁড় জড়িয়ে ধরে। টানা তিন দিন পরে প্রিয় মাহুতকে দেখার পরে এ দিন আনন্দের সঙ্গেই খাবার খেয়েছে লক্ষ্মী।
হাতির লেজের লোম ছিঁড়ে তাবিজ করে পরলে রাজা হওয়া কেউ ঠেকাতে পারবে না। এই অন্ধবিশ্বাসে শনিবার বালিয়াহাট এলাকায় হাতিটাকে নাগাড়ে উত্ত্যক্ত করছিল কিছু লোক। মাহুতেরা বারবার নিষেধ করলেও কেউ তাঁদের কথায় কান দেয়নি।
আচমকা শুঁড়ের ঝাপট দেয় হাতিটা। তার ঝটকায় ভিড়ের মধ্যে থেকে দেওয়ালে গিয়ে ছিটকে পড়েন কালু শেখ নামে আন্দুলিয়ার এক প্রৌঢ়। তড়িঘড়ি তাঁকে কান্দি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও বাঁচানো যায়নি। অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগে মাহুত গুলা দাসকে পুলিশ গ্রেফতারও করে। মঙ্গলবার তাঁকে কান্দি আদালতে তোলা হলে বিচারক জামিন মঞ্জুর করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত লক্ষ্মীর মনিব উত্তরপ্রদেশের কেদারনাথ দুবে হাতিটির আসল নথিপত্র নিয়ে খড়গ্রামে পৌঁছতে পারেননি। তাই হাতিটি আপাতত খড়সাতেই আছে। আর হাতিটিকে যাতে কেউ বিরক্ত না করে সে জন্য এক সিভিক ভল্যান্টিয়ার পাহারা দিচ্ছে। প্রধান মাহুত রাকেশ দুবে বলেন, “মালিক কাগজ নিয়ে আসছেন। শিগ্গির তিনি চলে আসবেন।”
মাহুত গুলা দাস বলেন, “প্রায় কুড়ি বছর ধরে আমি লক্ষ্মীর সঙ্গে আছি। আমি ছাড়া ও খেতেই চায় না। যা ঘটেছে তা সত্যিই খুব দুঃখজনক। লক্ষ্মীকে ও ভাবে উত্ত্যক্ত না করলে ও কিছুই বলত না।’’