প্রতীকী ছবি।
টানা লকডাউনের ফলে জোর ধাক্কা খেয়েছিলেন জেলার ব্যবসায়ীরা। সেই ধাক্কা সামলে কিছুটা চাঙ্গা হল পুজোর বাজার। অন্য বছরের মত এ বার পুজোতে লাভ সেভাবে না হলেও লকডাউনের ক্ষতি খানিকটা পুষিয়েছে বলে জানান জেলার একাংশ ব্যবসায়ী।
পুজোর আগে শেষ শনিবার বহরমপুর সহ জেলার একাধিক জায়গায় পুজোর শেষ মুহুর্তে কেনাকাটা করতে মানুষের ঢল নামে রাস্তায়। মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট চেম্বারস অব কর্মাসের যুগ্ম সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, “লকডাউনের ফলে জেলার লক্ষাধিক ব্যবসায়ী বিরাট আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন। পুজোর কেনাকাটার প্রথম দিকে সেই রকম ভিড় না হলেও শেষবেলায় মানুষ বাজারমুখী হয়েছেন। ফলে ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে।”
করোনা ঠেকাতে মার্চের শেষে চৈত্রসেলের মুখে দেশ জুড়ে লকডাউন শুরু হয়। প্রথমে পনেরো দিনের জন্য হলেও করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় লকডাউনের মেয়াদও বাড়তে থাকে। সেই সময় বাধ্য হয়ে বন্ধ হয়ে যায় চৈত্র শেষের বেচাকেনা। আর্থিক ক্ষতির সেই শুরু।
পরে ইদের সময় বিধি মেনে দোকান খোলার ছাড়পত্র পান বিক্রতারা। কিন্তু একদিকে মানুষের আয় কমে যাওয়ার ফলে হাতে অতিরিক্ত অর্থের জোগান না থাকা অন্যদিকে করোনা ঠেকাতে বিধির কড়াকড়িতে মানুষ বাজারমুখী সে ভাবে হননি বলে দাবি জেলার ব্যবসায়ীদের।
আনলক পর্ব শুরু হতেই ধাপে ধাপে বেশ কিছু ক্ষেত্র ছাড়পত্র পায়। পুজোর আগে চলতি মাসে আনলক পাঁচে সেই ছাড়পত্রের সংখ্যা বেশি হওয়ায় বাজারের মানুষের আনাগোনা বাড়তে শুরু করে। বিধি ভেঙে ভিড় জমতে থাকেতে জেলার বিপণিগুলিতেও। হাসি ফোটে ছোট ব্যবসায়ীদের মুখেও।
লালবাগের ব্যবসায়ী তাপস মোদক বলেন, “চৈত্র সেল ও ইদে বেচাকেনা বন্ধ ছিল। ফলে সেই সময় যা আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল দিন দশেক ধরে বাজারে লোকজনের আনাগোনায় যে ভাবে বেড়েছে তা পুজোর দিন পর্যন্ত থাকলে আশা করা যায় ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে যাবে।”
কান্দি বাজারের এক কাপড় ব্যবসায়ীয় কথায়, গত তিন সপ্তাহ ধরে বাজারে ভিড় হচ্ছে। তার মধ্যে শনিবার ভিড়টা একটু বেশিই হয়েছে বলে জানান তিনি। তাঁর দাবি রবিবার আরও বেশি ক্রেতা বাজারে আসবেন। একই অবস্থা সালার, বড়ঞার ডাকবাংলো, পাঁচথুপি নগর বাজারেরও। কাপড় ব্যবসায়ী মহিতোষ দত্ত বলেন, ‘‘করোনার কারণে এ বার পুজোর বাজারে বেচাকেনা তেমন জমবে না ভেবেছিলাম, কিন্তু আমাদের ধারণাকে মিথ্যা প্রমাণিত করেছে ক্রেতারা। আমরা খুশি।’’
তবে ডোমকলে যেটুকু কেনাকাটা হয় সেটাও নেই। ফলে ব্যবসায়ীদের একেবারে মাথায় হাত পড়েছে। ডোমকল বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক আফাজউদ্দিন বিশ্বাস বলছেন, ‘‘করোনা ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি নীতির ফলে ব্যবসায়ীরা ধুঁকছেন, সকলেই আশা করেছিলন পুজোর বাজারে কিছুটা হলেও বেচাকেনা হবে, কিন্তু একেবারেই মাছি তাড়ানোর অবস্থা ব্যবসায়ীদের।” একই ভাবে হরিহরপাড়া, নওদার অধিকাংশ দোকানে ভিড় তেমন চোখে পড়েনি শনিবারও। সেখানে স্বাভাবিক কেনাকাটাই সেরেছেন ক্রেতারা। তবে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় যে সমস্ত ব্যবসায়ীরা বিদ্যালয়ের পোশাকের ব্যবসা করতেন। পুজোতেও বন্ধ থাকল তাঁদের ব্যবসা।