কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির রাজরাজেশ্বরীর বিসর্জন। নিজস্ব চিত্র।
শহরে ক্রমশ বাড়ছে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা। এর মধ্যেই সোমবার ভাসানকে ঘিরে ঘাটে প্রচুর মানুষের জমায়েত হল শান্তিপুরে। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। তবে শান্তিপুর থানার বেলগড়িয়া ১ পঞ্চায়েতের বয়রাঘাটে ভাসানের প্রক্রিয়া চলেছে জমায়েত ছাড়াই। ক্রেনেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল।
মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত শান্তিপুর শহরে মোট করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ৪৮০। তার মধ্যেই দশমীর দিন প্রতিমা ভাসানের সময়ে শান্তিপুর শহরের বিসর্জনের ঘাটে ব্যাপক মানুষের জমায়েত হয়। শহরের মধ্যে বড়বাজার ঘাট, মতিগঞ্জ ঘাট এবং কৃষ্ণকালীতলার কাছের ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন হয়। সন্ধ্যার পর থেকেই সেখানে মানুষের ঢল নামতে থাকে।
পুরসভা সূত্রে জানা যায়, শান্তিপুর শহরের মধ্যে শতাধিক বারোয়ারি পুজো হয়। এ ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন বাড়ির পুজো। বিভিন্ন বারোয়ারি পুজো কমিটির প্রতিমার সঙ্গে বহু মানুষ এসেছেন। এ ছাড়াও ঘাটগুলিতে বহু মানুষ বিসর্জন দেখতে জড়ো হয়েছেন। তা নিয়ন্ত্রণ করাও সম্ভব হয়নি। দুপুর থেকে শহরের তিনটি ঘাটে বিসর্জন শুরু হয়। রাত পর্যন্ত মতিগঞ্জ ঘাটে ৬২টি, বড়বাজার ঘাটে ন’টি এবং কৃষ্ণকালীতলার কাছে বিসর্জনের ঘাটে ২০টির বেশি প্রতিমা বিসর্জন হয়। বেশ কিছু বারোয়ারি কমিটির প্রতিমার সঙ্গে যেমন প্রচুর মানুষ এসেছেন, তেমনই মতিগঞ্জ মোড় এলাকায় অনেকে দাঁড়িয়েও অপেক্ষা করেছেন প্রতিমা দেখার জন্য।
দুর্গাপুজো দিয়েই কার্যত উৎসবের মরশুম শুরু হয়ে গেল। উৎসব পালনের ক্ষেত্রে সচেতনতার আহ্বানও জানাচ্ছেন অনেকেই। এ দিনের পরে মানুষের সচেতনতার অভাবকে যেমন দায়ী করা হচ্ছে, তেমনি প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তার কথাও উঠছে। তিনদিনের মধ্যে বিসর্জনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা। বিভিন্ন পুজো উদ্যোক্তাদের আলাদা ভাবে দিন নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, তবে নির্দিষ্ট কোনও সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত এক জায়গায় জমায়েত হয়ে যায় মানুষের। বহু জনের মুখে মাস্কও ছিল না। নানা গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ও মোড়ে পুলিশকর্মী এবং সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করেও জমায়েত ঠেকানো যায়নি। বিসর্জনের ঘাটমুখী মানুষের স্রোতও নিয়ন্ত্রন করা যায়নি। তার জন্য বড়সড় ব্যবস্থাও ছিলনা।
শান্তিপুরের পুর প্রশাসক অজয় দে বলছেন, “উৎসবের মরশুমে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। এর মধ্যে সকলকেই সচেতন হতে হবে।” পাশাপাশি, বেলগড়িয়া ১ পঞ্চায়েতের বয়রা ঘাটেও ভাসানের ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানেও ফুলিয়া এলাকার অনেক প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে। তবে সেখানে ক্রেনের ব্যবস্থা করা হয় ভাসানের জন্য। আবার ফুলিয়া এলাকা থেকে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য মানুষের ঢলও ছিল না। পুজো উদ্যোক্তারাও সেখানে প্রতিমা নিয়ে এসেছেন অল্প সংখ্যক লোক নিয়েই। নির্বিঘ্নেই ভাসান সম্পন্ন হয়েছে জমায়েত ছাড়াই।